রাজাকার ইদ্রিসের ফাঁসিতে শরীয়তপুরে স্বস্তি

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শরীয়তপুরের রাজাকার ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে ইদ্রিস মৌলভীর ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়ায় আনন্দ ও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পলাতক ইদ্রিস আলীর ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন।
২০১০ সালের ২৬ মে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইদ্রিস আলীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ তালুকদার। এরপর মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ইদ্রিস আলী সরদারের রায় ঘোষণার পর পরই শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জীবিত কয়েকজন সদস্য রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জলিল হাওলাদার বলেন, ১৯৭১ সালের ২২ মে রাজাকার সোলায়মান মৌলভী, ইদ্রিস আলী সরদারসহ অন্য রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকবাহিনী শরীয়তপুরের মধ্যপাড়া এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই শতাধিক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। তাদের বাড়িঘর লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।
এ ছাড়া এলাকার প্রায় ৩০-৩৫ জন যুবতী নারীকে মাদারীপুরের এআর হাওলাদার জুটমিলে নিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে। ইদ্রিস মৌলভী দেশ ও মানবতার শত্রু। তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।
এদিকে রায় ঘোষণার পর শরীয়তপুরে আঙ্গারিয়ার কাশাভোগ গ্রামে রাজাকার ইদ্রিস আলী সরদারের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ভাইয়ের ছেলে নিপেল সরদার জানান, এক বছর ধরে তিনি তাঁর চাচাকে দেখেননি। কোথায় আছেন তাও জানেন না।
মামলার বাদী আবদুস সামাদ তালুকদার বলেন, রাজাকার ইদ্রিস মৌলভী সম্ভবত দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছেন। তাঁকে খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে হবে। তাহলেই স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ স্বীকার করা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা শান্তি পাবেন।