ছাত্রলীগের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝিতে’ থানায় হামলা-ভাঙচুর-গুলি

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা ভবনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সহকারী পুলিশ সুপারের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, থানায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। পুলিশের দুজন কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছে, ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে’ ওই ঘটনা ঘটেছে। জেলা ছাত্রলীগের নেতাও জানিয়েছেন, এটা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ ছাড়া কিছুই না।
তবে পুলিশ ও ছাত্রলীগের এই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ সমাধান করতে পুলিশকে ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে।
পুলিশ জানায়, দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে শহরের প্রধান সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে অবৈধ মোটরসাইকেল আটক অভিযান চালায় সদর থানা পুলিশ। এসআই শাহিদ এ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে তিনটি মোটরসাইকেলে তিনজন করে মোট নয়জন আরোহী চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে কাগজপত্র দেখতে চায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করে। এ নিয়ে পুলিশের সাথে তাদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা থানায় গিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় থানার এসআই অরূপ কুমার আহত হন।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামসুর রহমান জানান, এ সময় ছয়টি গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
থানা থেকে ফেরার পথে শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়কে সহকারী পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়ের গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। তবে এ সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না।
হবিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিনুল হক বলেন, ‘কিছু ছেলেপেলে মেইনরোড থেকে থানায় ঢিল মারে। এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি। পুলিশের প্রস্তুতি ছিল না। এরা কারা আমরা খোঁজ নিচ্ছি। ছাত্রলীগের কর্মীরা ছিল। ওরাই থানায় এসেছিল।’
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুর রহমান বলেন, ‘থানায় কিছু ছেলেপেলে ঢিল মারে। মোটরসাইকেলে করে তিনজন যাচ্ছিল। পুলিশ বলে দুজন করে যেতে হবে। পরে এরা উত্তেজিত হয়ে থানায় যায়। ওসির সঙ্গে কথা বলে। থানার ওসি পরে ওদের সাথে কথা বলে বিষয়টি ম্যানেজ করে। ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতৃত্বরা ছিল। ওরা উত্তেজিতদের নিবৃত্ত করে। অচেনা লোকজন ঢিল মারে।’
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুকিতুল ইসলাম বলেন, ‘এটা একদমই ছোটখাটো ঘটনা। ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের পর মোটরসাইকেলে করে ছাত্রলীগের কর্মীরা ফিরছিল। পরে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু পরে আমরা থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বসে মিউচুয়াল (মিটমাট) করে ফেলেছি। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এটা হয়েছে। আর কিছু না।’