বিনা পরোয়ানায় পুলিশ শিক্ষার্থীকে আটক করায় বাবার মৃত্যু
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/07/30/laksmipur-news.jpg)
লক্ষ্মীপুরে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় শিক্ষার্থী সাইফ মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় আতঙ্কিত হয়ে তাঁর বাবা সামছুল আলম মামুন (৫২) মারা গেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় পুলিশ তাঁকে আটক করে। গতকাল সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ সাইফকে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। এরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাবার জানাজায় অংশ নিতে আদালত তাঁকে আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্যারোলে মুক্তি দেন।
নিহত মামুন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের মজুপুর এলাকার কালু হাজি সড়কের বাসিন্দা ও পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। গ্রেপ্তর হওয়া আলী চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
স্থানীয়রা জানায়, লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে আলী অংশ নিয়েছিলেন। গতকাল সোমবার রাতে সাইফকে আটক করতে পুলিশ তাঁর বাসায় অভিযান চালায়। ঘটনার সময় আলী ঘুমে ছিলেন। পরে তাঁকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যান। এ সময় ছেলেকে নিতে বাবা মামুন বাধা দেন। ছেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কি না তাও বলেনি পুলিশ। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন এবং মারা যান।
আদালত সূত্র জানায়, পুলিশের নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আলীকে আদালতে পাঠালে সেখানে তাঁর পক্ষে আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান বিষয়টি আমলে নেন। পরে সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমের জিম্মায় আলীকে বাবার জানাজায় অংশ নিতে আজ বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্যারোলে মুক্তি দেন।
আসামির আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, আলীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তার পরও পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে পুলিশ তাঁকে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আটকের বিষয়টি তাঁর বাবা মামুন সহ্য করতে পারেননি। এতে আতঙ্কিত হয়ে তিনি মারা যান। ঘটনাটি আমরা আদালতে উপস্থাপন করে আলীর জামিন চেয়েছিল। আদালত তাঁকে জানাজায় অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আলীর মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে রাজনীতি করে না। তার নামে কোনো মামলাও ছিল না। পুলিশ জোর করে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। তা সহ্য করতে না পেরে আমার স্বামী মারা গেছেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকালে শুনেছি। একই ঘটনায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।