দীপ্ত টিভির কর্মকর্তা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৫
রাজধানীর রামপুরায় ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিমকে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় ১৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছে তামিমের পরিবার।
আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রুহুল কবির খান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. আব্দুল লতিফ (৪৬), মো. কুরবান আলী (২৪), মাহিন (১৮), মোজাম্মেল হক কবির (৫২) ও বাঁধন (২০)।
মো. রুহুল কবির খান বলেন, এ হত্যার ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মামুন এবং বিএনপি নেতা ও প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজ লিমিটেডের কর্ণধার শেখ রবিউল আলম রবির প্রাথমিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তদন্ত করে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
ডিসি মো. রুহুল কবির খান বলেন, জমির মালিককে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজ লিমিটেডের পাঁচটি ফ্ল্যাট দেয়ার চুক্তি থাকলেও, তারা দুটি হস্তান্তর করেছে। বাকি তিনটির মধ্যে একটি ফ্ল্যাট অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মামুনের শ্বশুরের কাছে বিক্রি করে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিসের কর্ণধার শেখ রবিউল আলম। ফ্ল্যাটটি তারা অবৈধভাবে জবরদখল করে রেখেছিল। যা নিয়ে গত তিন বছর ধরেই দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই দ্বন্দ্বের জেরে অভিযুক্তরা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা করলে দীপ্ত টিভির কর্মকর্তা তানজিল ইসলাম জাহান তামিম গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির খান বলেন, আমরা রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় নিচ্ছি না, আমরা অপরাধ ও অপরাধী হিসেবে দেখছি। সে যেই হোক, তার দায় থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা চার্জশিট দেব।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় শুরুতে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবীর বলেন, ‘হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দায়িত্ব অবহেলার কারণে ইতোমধ্যে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার অবহেলার প্রমাণ পেয়েছি।’
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালের দিকে পশ্চিম রামপুরার মহানগর প্রজেক্টের ৪ নম্বর রোডের ডি-ব্লকের বাড়ির আটতলার একটি ফ্ল্যাটে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই লোকজন তামিমকে উদ্ধার করে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তামিমের বাবার অভিযোগ, প্লিজেন্ট প্রোপার্টিস নামে ওই কোম্পানির কর্ণধার শেখ রবিউল আলম রবির নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়িটির ল্যান্ড ডোনার নিহতের বাবাসহ মোট তিনজন। তাদের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই বাড়িতে ঢোকে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিস নামে ডেভলপার কোম্পানির লোকজন। তাদের সঙ্গে বহিরাগত কয়েকজন ছিলেন।
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, তারা ল্যান্ড ডোনারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তারা তামিমের বুকে কিল-ঘুষি দেন। এরপর তার গলা টিপে ধরেন। এতে তামিম অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। এরপর হাতিরঝিল থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিসের ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে আটক করে।