একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিলেন গৃহবধূ, চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তা
খুশির বন্যা বইছে এক প্রবাসীর ঘরে। পরপর চারটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী সুমী আক্তার। দুটি ছেলে আর দুটি কন্যা শিশু। নতুন চার অতিথি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা গোটা পরিবার। কিন্তু, শিশুদের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবার।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) রাতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিদ্যা বিশেষজ্ঞ ডা. রীনা নাসরিন তত্ত্বাবধানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হয় চার নবজাতকের।
আপাতত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ডাক্তার ও নার্সদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে চার নবজাতক। চারটি নবজাতকই সুস্থ আছেন। তবে, তাদের মধ্যে দুজনের ওজন অপেক্ষাকৃত কম।
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের নার্সদের ইনচার্জ সোনিয়া খাতুন জানান, সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা চলছে শিশুদের।
নবজাতকদের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমাঈল হোসেন জানান, সবকটি শিশু মোটামুটি ভালো বলা যায়। তবে, অপরিপক্কতাজনিত বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো অতিক্রম করতে পারলে সুস্থ অবস্থায় আমরা মায়ের কাছে স্থানান্তর করব।
৩১ সপ্তাহে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের ওজন এক হাজার ১০০ গ্রাম থেকে এক হাজার ২০০ গ্রামের মধ্যে। এদের মধ্যে দুজনের বেশি অক্সিজেন লাগছে। একটি সুস্থ সবল নবজাতকের বয়স হতে হবে ৩৭ সপ্তাহ। আর ওজন হতে হবে আড়াই হাজার গ্রাম।
নবজাতকদের মা টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার কাঞ্চনপুর গ্রামের সুমী আক্তার সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যাকেন্দ্রের খরচ বহনের মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। ওষুধ আর বিল পরিশোধের দুশ্চিন্তা সব আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে রোমানিয়া থেকে নবজাতকদের বাবা আব্বাস খান জানান, মাত্র সাত মাস আগে দেশ থেকে আমি প্রবাসে এসেছি। একসঙ্গে চার নবজাতকের জন্ম নেওয়ার খবরে আমি অনেক খুশি। মনে হচ্ছে এখনি বাংলাদেশে ছুটে যাই। সংসারের অভাব ঘোচাতে আমি রোমানিয়া এসেছি। অভিবাসন ব্যয় ওঠাতেই আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তার ওপর আইসিইউতে চারটি নবজাতকের চিকিৎসা বিল কোথা থেকে পরিশোধ করব সেই ভাবনায় আছি।
দেশবাসীর সাহায্য প্রার্থনা করে আব্বাস খান বলেন, ‘আমি সামান্য একজন প্রবাসী। সরকার যদি সদয় হয়ে আমার নবজাতকদের চিকিৎসায় উদ্যোগ নিতো তাহলে আমি খুশি হতাম।’ এ বিষয়ে দেশ ও প্রবাসে থাকা সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।