বাঁধ নির্মাণে চীন-ভারত যাতে আমাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে কাজ করে : উপদেষ্টা রিজওয়ানা
চীনের ইয়ারলুং জ্যাংবো ও ভারতের সিয়াং নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করছে চীন। এ বিষয়ে আমরা চীনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য চেয়েছি। তবে চীন আমাদের জানিয়েছে, তাদের এই প্রকল্পের কারণে আমাদের নিচু অঞ্চলগুলোর ক্ষতি হবে না। বিস্তারিত তথ্য-উপাত্তগুলো না পেলে এখনই কিছু বলা সম্ভব না।
আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালনা বোর্ডের ৫৫তম সভায় অংশগ্রহণ করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভারত যেখানে বাঁধ তৈরি করছে সেখানে তাদের নিজেদের জনগণই বিরোধিতা করছে। আমরা নিচু অঞ্চলের দেশ। একদিকে তিস্তা-পদ্মা নদীতে পানি কমে গেছে। এখন যদি ব্রহ্মপুত্র নদেও পানি কমে যায় তাহলে আমরা সমস্যায় পড়ব। কাজেই আমরা চীনের কাছে যেভাবে তথ্য উপাত্ত চেয়েছি, ভারতের কাছেও চাইব। আমাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে তারা যাতে কাজ করে, সেটা নিশ্চিত করব।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের স্বার্থকে অক্ষুণ্ন রেখে তারা যাতে কাজ করে সেটা নিশ্চিত করব। এখানে একটি নতুন মোড় সেটা হচ্ছে, সব সময় বাংলাদেশ-ভারতকে বলে আমাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। এবার কিন্তু ঘটনাটা একটু উল্টো। এখন কিন্তু ভারত চীনকে একথা বলতে বাধ্য হচ্ছে।
নদী গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, আমাদের আধুনিক গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। তবে সেখানে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। এবছর গবেষণার জন্য ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দ দিয়ে ১ হাজার ১৭৬টি নদীর গবেষণা করা সম্ভব না। আগামীতে গবেষণা খাতে বাড়াতে আমাদের চেষ্টা থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘাতে জড়ানো কারো জন্যেই শুভ নয় উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের এভাবে সংঘাতে যাওয়ার পেছনে কারো উসকানি রয়েছে কিনা, তা বের করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। গণতন্ত্রে যাওয়ার পথ এমনিতেই অনেক কঠিন। তারপরেও আমরা যখন এই যাত্রাটা শুরু করলাম কোনো অসহিষ্ণু আচরণের জন্য সেটা যেন বাঁধার মুখে না পড়ে। এই জন্য সকলকে ধৈর্য ধরতে হবে।
মতবিনিময় সভা শেষে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট চত্বর ঘুরে দেখেন পানি সম্পদ উপদেষ্টা। এ সময় বাংলাদেশ নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আবু হোরায়রা, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিলসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।