ধামরাইয়ে শিক্ষার্থী ও পার্ক কর্মচারীদের সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/dhamrai.jpg)
ঢাকার ধামরাইয়ে পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্ক কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সিতি এলাকায় আলাদীনস পার্কে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম ও বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
এদিন সকাল ১০টার দিকে মিরপুরের বনফুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রটিতে পিকনিকে আসেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক, আলাদীনস পার্ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৬৫০ জন ১২টি বাসে করে বিনোদন কেন্দ্রটিতে আসেন। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মোবাইলফোনসহ মালামাল লকারে রেখে ওয়াটার পার্কে নামেন। ওয়াটার পার্ক থেকে উঠে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার খোলা অবস্থায় পান এবং দেখেন মোবাইলফোন নেই। এ নিয়ে পার্ক কর্মচারীদের দায়ী করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যস্ততায় মীমাংসা হয়, তবে মুঠোফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিকেল ৫টার দিকে বিনোদন কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার সময় হয়। তবে শিক্ষার্থীরা মুঠোফোন না পাওয়া পর্যন্ত বিনোদন কেন্দ্র ছাড়বেন না বলে জানায়। একপর্যায়ে তারা বিনোদন কেন্দ্রের স্থাপনায় ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় বিনোদন কেন্দ্রের কর্মচারীরা চড়াও হয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পার্ক কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের পরিবহণের অন্তত আটটি বাস ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী এবং ১০ থেকে ১৫ জন পার্ক কর্মচারী আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক নাসির আফজাল বলেন, ‘ছোট থেকে ঘটনার শুরু। কয়েকটি মোবাইলফোন খোয়া যায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তখন ছাত্ররা বলেছে, মোবাইলফোন ছাড়া বাসায় গেলে সমস্যা। ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। তখন আমরা বললাম, তারা যদি না দেয়, আমরা দেখব। এর মধ্যেই তারা (শিক্ষার্থীরা) ভাঙচুর করে। এটি দেখে হয়তো তারা (পার্কের স্টাফ) আশপাশের লোকজন ডেকেছে। তারাও ভাঙচুর করেছে। এতে আহত ছয়জনকে এনাম মেডিকেলে নেওয়া হয়। অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেন। সবমিলিয়ে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছে। আমরা মামলা করব। বাকিরা থানায় গেছে। এটার ক্ষতিপূরণের বিষয় আছে।’
এ বিষয়ে আলাদীনস পার্কের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা নকিবুল হাসান রনি বলেন, ‘ঘটনা দুবার ঘটেছে—দুপুরে একবার, বিকেলে একবার। দুপুরে মীমাংসা হওয়ার পরে বিকেলে যাওয়ার সময় সবকিছু ভাঙচুর করে গেছে। মোবাইলফোন হারানোর মতো কিছুই হয়নি।’
নকিবুল হাসান রনি দাবি করেন, ‘আমাদের স্টাফকে প্রথমে মারধর করেছে, পরে তাদের শিক্ষকদের ডেকে এনে বিষয়টা মীমাংসা করেছি। শিক্ষকরা মারধরের শিকার স্টাফদের সান্ত্বনা দিয়ে চলে গেছে। পরে বের হওয়ার সময় তারা ভাঙচুর করেছে এবং স্টাফদের মারধর করেছে। স্টাফরা নিরুপায় হয়ে যায়। এলাকার মানুষজনও আসে। পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। আমাদের ১৫ থেকে ১৬ জন আহত হয়েছে, এরমধ্যে সবাই জখম হয়েছে। আহত সবাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘটনার বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীরা মোবাইলফোন হারানোর অভিযোগ তোলে বিনোদন কেন্দ্রের কর্মচারীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা-হাতাহাতিতে জড়ায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’