শিশু-কিশোররা চালাচ্ছে অটোরিকশা, বাড়ছে দুর্ঘটনা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শিশু-কিশোররা চালাচ্ছে অটোরিকশা। অনভিজ্ঞ ও অপ্রাপ্ত বয়সে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে অটোরিকশা নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। ফলে সড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। একশ্রেণির অতি মুনাফালোভী মালিকরা অভাবগ্রস্ত পরিবারের শিশু-কিশোরদের হাতে তুলে দিচ্ছে অটোরিকশা। এতে সড়কে ঝরে যাচ্ছে অনেকের প্রাণ।
জানা যায়, ভৈরবের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কসহ প্রায় ১০টিরও বেশি আভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে প্রতিদিন প্রায় শত শত অটোরিকশা চলাচল করে। মহাসড়কগুলোতে এই জাতীয় যান চলাচল সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও আইনের প্রয়োগ না থাকায় প্রতিনিয়তই মহাসড়কে বাড়ছে অটোরিকশার সংখ্যা। একশ্রেণির অতি মুনাফালোভী মালিক গরিব পরিবারগুলোর দরিদ্রতার সুযোগে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মজুরিতে ওইসব শিশু-কিশোরদের হাতে তুলে দিচ্ছে ইজিবাইকের চাবি। এতে করে ঘটছে হতাহতের ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন যাত্রী সাধারণ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব পৌরসভার সহকারী লাইসেন্স ইন্সপেক্টর মো. তুহিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা লাইসেন্স দেওয়ার সময় ভোটার আইডি কার্ড দেখে দেই। ফলে ১৮ বছরের নিচে কারও লাইসেন্স পাওয়ার সুযোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রে মুনাফার লোভে মালিকরা তাদের লাইসেন্সকৃত রিকশা-অটোরিকশা শিশু-কিশোরদের হাতে তুলে দেয়। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ এলে আমরা ওইসব মালিকদের লাইসেন্স বাতিলসহ বিভিন্ন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।’

ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাবুর রহমান বলেন, এই অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের প্রায়ই আটক করে জরিমানা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম।
ভৈরব পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ পেশাসহ সব প্রকার শিশুশ্রম আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি বন্ধে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মালিকদের জরিমানা করা হয়। তবে দরিদ্রতার কারণে অনেক শিশু-কিশোর ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বাধ্য হয়। শিশুশ্রম বন্ধে আমরা সভা-সেমিনার করে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি।’
শবনম শারমিন আরও বলেন, ‘অটোরিকশা চালানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দিলে আমরা মালিকদের লাইসেন্স বাতিলসহ আর্থিক জরিমানা করে থাকি।’