আসন্ন বাজেটে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও তরুণ প্রজন্ম ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে তামাক খাতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স রুমে ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ : বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।

গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) এই কর্মশালার আয়োজন করে।

বক্তারা বলেন, সিগারেটে চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম কাছাকাছি হওয়ায়, ভোক্তা যেকোনো একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও নিত্যপণ্যের তুলনায় এগুলো আরও সস্তা হয়ে পড়ছে। নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাস মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একই সময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ক্ষতিকর পণ্য ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হচ্ছে।

কর্মশালায় জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে, ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। একইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

কর্মশালায় আলোচক ছিলেন—দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমান, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, আত্মার কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের ও মো. হাসান শাহরিয়ার প্রমুখ।