ট্রাইব্যুনালে এপর্যন্ত ৬২ পুলিশ ও ৯ সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত ১৪১ জনের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে পুলিশের ৬২ জন সাবেক সদস্য ও নয়জন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ১০ এপ্রিল পর্যন্ত আমরা ৩৩৯টি অভিযোগ পেয়েছি। বর্তমানে ৩৯টি মামলার তদন্ত চলছে। ১৪১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৮৭ জন এখনো পলাতক।
মানবতা বিরোধী অপরাধের মতো জটিল তদন্তের কাজে অভিজ্ঞ ও দক্ষ তদন্ত কর্মকর্তার অভাব, জনবলের অভাব, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত সরকারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা, প্রসিকিউটর ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এছাড়া বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে তদন্ত ও বিচার ব্যাহত করার চেষ্টা, এমনকি তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটরদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রাখার মতো চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, এই সমস্ত বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের এবং এই কারণেই তদন্তের সময়সীমা নির্ধারণ করা যুক্তিসঙ্গত হবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা নৃশংসতার পেছনের মূল হোতা এবং অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে চাই। আমরা ট্রাইব্যুনালের অতীতের ‘স্ট্যান্ডার্ড অব প্রোভিং’ অনুসরণ করতে চাই না। আমরা আপনাদের সামনে উজ্জ্বল সত্য তুলে ধরেছি।’
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়টি আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থার ব্যবস্থার মধ্যেই প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংস্থাটি ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার বিষয়ে ১০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠিয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, ট্রাইব্যুনাল এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ব্যক্তির বক্তব্য রেকর্ড এবং ভিডিও ক্লিপিংসহ এক হাজারেরও বেশি ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। তিনি আরও জানান, ট্রাইব্যুনালের প্রতিনিধি দল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ঢাকায় তিনটি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় তিনটি করে গুমের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।