গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে পরী মণির মানহানির মামলা

অনলাইনে কুৎসা রটনা করে মানহানির অভিযোগে গৃহকর্মী পিংকি আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন চিত্রনায়িকা পরী মণি।
আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের আদালতে বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন তিনি। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে, আগামী ৮ জুলাই এ বিষয়ে তদন্ত করে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মো. জুয়েল মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল ২২ এপ্রিল পরী মণিসহ দুজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী গৃহকর্মী পিংকি আক্তার। শুনানি শেষে আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ৮ মের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামি হলেন একই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সৌরভ।
মামলার আরজি থেকে জানা গেছে, ২০২৪ সালের মার্চে মামলার বাদী পিংকি আসামিদের বাসায় কাদের এজেন্সি নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহপরিচারিকার চাকরি নেন। একটি বাচ্চাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে এজেন্সি থেকে বাদীকে আসামিদের বাসায় নিয়োগ দেওয়া হলেও তাকে দুটি বাচ্চার দায়িত্ব পালন করতে হতো। এ ছাড়া বাদীকে দিনে ও রাতে উভয় সময় বাসার রান্নার কাজ করতে হতো। তবুও বাদীর চাকরি একান্ত আবশ্যক হওয়ায় তিনি মুখ বুজে সহ্য করে আন্তরিকতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে চলতি বছরের ২ এপ্রিল দুপুর ১টায় আসামি পরী মণি তার মেকআপ রুম থেকে মাদক গ্রহণ করে বাচ্চার রুমে এসে বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। বাদী গালিগালাজ কেন করছেন জানতে চাইলে পরী মণি বলেন, তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন তৈরি করছিস, এখন ওকে সলিড খাবার দিবি। বাদী বলে, বাচ্চার খাওয়ার রুটিন অনুসারে এখন দুধ খাওয়ানোর কথা, তাই আমি দুধ তৈরি করেছি।
এসময় পরী মণি ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীর মাথায়, মুখে ও চোখে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী বাদী পিংকি পরী মণির মারধরে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর বাদী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী পিংকি তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পরী মণিকে অনুরোধ করতে থাকেন। ঘটনার সময় ২নং আসামি সৌরভ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আসামিরা বাদীর কোনো কথা শোনেননি। উপরন্তু আসামি সৌরভ পিংকিকে নির্যাতন করার জন্য পরী মণিকে উৎসাহিত করতে থাকেন এবং বাদীকে বাসার বাইরে যাওয়া থেকে বিরত করেন। পরে ভুক্তভোগী পিংকি ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে যান। পরে ভুক্তভোগী পিংকি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার গত ৪ এপ্রিল ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেটির কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য না করে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন।