চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চাইবে প্রসিকিউশন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত টাইলার রবিনসনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চাইবে প্রসিকিউশন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইউটাহ কাউন্টির প্রধান প্রসিকিউটর জেফ গ্রে এ ঘোষণা দেন। খবর আল জাজিরার।
রবিনসনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— গুরুতর হত্যাকাণ্ড, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার, বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি, সাক্ষী প্রভাবিত করা এবং শিশুর উপস্থিতিতে সহিংস অপরাধ সংঘটন।
প্রসিকিউটর গ্রে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি এ সিদ্ধান্ত হেলাফেলা করে নেইনি। অপরাধের প্রকৃতি ও প্রমাণের ভিত্তিতেই মৃত্যুদণ্ড চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, অভিযোগে দুটি গুরুতর কারণ যুক্ত করা হয়েছে— কার্ককে তার রাজনৈতিক মত প্রকাশের কারণে টার্গেট করা এবং শিশুদের উপস্থিতির মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো।
রবিনসন মঙ্গলবার প্রথমবার ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির হন। এ সময় তাকে আত্মহত্যা প্রতিরোধী পোশাক পরা অবস্থায় দেখা যায়। বিচারক টনি গ্রাফ তাকে সরকারি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন ২৯ সেপ্টেম্বর।
ঘটনার বিস্তারিত জানাতে প্রসিকিউটর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ফুটেজে দেখা যায়— কালো পোশাক পরা এক ব্যক্তি একটি ছাদে উঠে যায়, যার হাঁটার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল সে প্যান্টের ভেতর রাইফেল লুকিয়েছে। পরে গুলি চালানোর পর তাকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
রবিনসনের মা ছবির মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করেন এবং পরে পরিবারের একজন অবসরপ্রাপ্ত শেরিফের সহায়তায় তাকে আত্মসমর্পণে রাজি করান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, হামলার পর রবিনসন তার প্রেমিকাকে মেসেজে জানায় যে, সে একটি নোট রেখে এসেছে, যেখানে লেখা ছিল— “চার্লি কার্ককে হত্যা করার সুযোগ পেয়েছিলাম এবং আমি তা করেছি।”
প্রেমিকা উত্তরে জিজ্ঞেস করলে, “তুমি করনি তো, তাই না?” রবিনসন স্বীকার করে, “হ্যাঁ, আমি করেছি। দুঃখিত।”
মেসেজে সে আরও লিখেছিল, “তার ঘৃণা আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। কিছু ঘৃণা আলোচনা দিয়ে মুছে ফেলা যায় না।”
ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রিপাবলিকানরা দাবি করছে, এটি কোনো বামপন্থী ষড়যন্ত্রের ফল। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, একপক্ষকে দোষারোপ করলে রাজনৈতিক সহিংসতা আরও বাড়তে পারে।

ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচার এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেলকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের দোষারোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে বলার জন্য।
এফবিআই প্রধান প্যাটেল জানান, তিনি এ বার্তা পৌঁছে দেবেন এবং পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হচ্ছে রবিনসনের সাথে অন্য কেউ বা কোনো সংগঠন জড়িত ছিল কি না।