চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আঙিনায় মিললো নবজাতকের মরদেহ

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আঙিনা থেকে এক নবজাতকের রক্তমাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালের প্রহরী মজিবুর রহমান হাসপাতালের দেওয়াল ও গ্রিলের পাশে শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে কর্তৃপক্ষকে জানান। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালে কর্মরত কোনো নার্স বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটিয়ে নবজাতককে বারান্দার গ্রিল দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
খবর পেয়ে চান্দিনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নবজাতকের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। মরদেহ মাটিতে পুঁতে ফেলার পরামর্শ দিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রহরী মজিবুর রহমান জানান, রাতে হাসপাতাল পাহারা দেওয়ার পর সকালে বের হওয়ার সময় গ্রিলের ফাঁক দিয়ে রক্তমাখা শিশুটির মরদেহ দেখে তিনি কর্তৃপক্ষকে জানান।
হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী পূর্ণিমা জানান, আরএমও (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) স্যারের নির্দেশে তিনি শিশুটিকে একটি কার্টনে করে স্টোর রুমে রেখেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, থানায় খবর দেওয়ার পর পুলিশ এসেছে। শিশুটি মাতৃগর্ভে আনুমানিক ৩০ সপ্তাহ পূর্ণ হলেও ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্ণতা পায়নি। তাই পুলিশের পরামর্শে তারা দুপুরে হাসপাতালের বাগানে মরদেহ মাটিচাপা দিয়েছেন।
এ ঘটনার পর স্থানীয় উৎসুক জনতা হাসপাতালে ভিড় করে। তারা দেখতে পান, সদ্যোজাত ছেলে শিশুটির মাথায় চুল গজানো, নাভির সাথে লম্বা নাড়ি পেঁচানো এবং রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। হাসপাতালের বারান্দার গ্রিল ও টাইলসে রক্তের দাগ দেখা যায়। স্থানীয়দের ধারণা, বুধবার রাতে হাসপাতালের কর্মরত নার্সদের যোগসাজশে অবৈধ গর্ভপাত ঘটিয়ে শিশুটিকে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান জানান, খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, এ ধরনের কোনো রোগী তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বাইরের কোনো ঘটনার পর শিশুটিকে হাসপাতালের ভেতরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের নার্সদের জড়িত থাকার সন্দেহের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় এ ঘটনায় কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গর্ভপাত করা শিশুটির বয়স কম হওয়ায় তারা মরদেহ থানায় আনেননি। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করা হয়েছে এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।