শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল ও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত মহান মে দিবসের বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে সব সময় আপসহীন সংগ্রাম করে গেছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় এই দলটি প্রতিশ্রুতি পালনে কখনোই পিছপা হয়নি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা মে দিবস নামে অভিহিত। প্রতি বছর ১ মে দিবসটি বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয়। আমি এই দিবসে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধি ও নিরাপদ জীবন কামনা করি।
বিশ্বের ইতিহাসে মে দিবস একটি অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ যে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষ আট ঘণ্টা শ্রম সময় ভোগ করছে তার জন্য ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে মজলুম শ্রমিকরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আট শ্রমঘণ্টা ও ন্যায্য মজুরির অধিকার আদায় সম্ভব হয়। জীবন দিয়ে রচিত হয় এক ঐতিহাসিক লড়াই সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, যা মহান মে দিবস।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তাই এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদুরপ্রসারী। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে শ্রমিকদের তাজা রক্ত ও জীবন দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও শোষণমুক্তির সংগ্রাম এক নতুন প্রেরণা লাভ করে। তাই সারা দুনিয়ার শ্রমজীবী মানুষ মে দিবস পালনের মাধ্যমে ‘মে শহীদদের’ স্মৃতিকে চিরঞ্জীব করে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্তাধীন সরকার শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণসহ শ্রমিক-কর্মজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। আগামীতেও বিএনপি নির্বাচিত হলে একইভাবে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে আরও সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করবে। শ্রমজীবী মানুষের ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়। শ্রমিকের ঐতিহাসিক অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন ১ মে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ গতিশীল চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা জরুরি। নিশ্চিত করতে হবে ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে সেই সুযোগটি সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ এখন সেই প্রকৃত গণতন্ত্রের বাস্তবায়ন দেখতে চায়। বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পতনের আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের রক্তস্নাত অবদান অবিস্মরণীয়। এই আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক জীবন দিয়েছেন। জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের ৭১ জন নেতাকর্মী ও ৩০ জন রিকশা শ্রমিক ছাত্র-শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন।