বিমানের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত খালেদা জিয়ার

দীর্ঘদিন লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া না গেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাধারণ ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় অবতরণ করবেন। তবে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিবেচনায় ফ্লাইটটির রুট লন্ডন-সিলেট-ঢাকার পরিবর্তে লন্ডন-ঢাকা-সিলেট করার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ বিমান। কিন্তু, অন্য যাত্রীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে তিনি প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৪ মে লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি ছেড়ে ৫ মে (সোমবার) সিলেট হয়ে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস ইউংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
শামসুদ্দিন দিদার বলেন, অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ, তথা বাংলাদেশ সরকার ফ্লাইটটি লন্ডন-সিলেট-ঢাকার পরিবর্তে লন্ডন-ঢাকা-সিলেট করার প্রস্তাব দেয়। তাঁর কাছে খবরটি পৌঁছালে ওই ফ্লাইটের অন্য যাত্রীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে তিনি কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন।
শামসুদ্দিন দিদার আরও বলেন, বিমান কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়ে মানবতার আরেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর দুই পুত্রবধূও দেশে ফিরতে পারেন। প্রায় পাঁচ মাস আগে গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডনে যান। তখন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে রাজকীয় বহরের বিশেষ একটি বিমান দেন। ওই বিশেষ বিমানে (বিশেষ ধরনের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে তিনি লন্ডন যান।
সেখানে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে গত ২৫ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডনের বাসায় যান তিনি। এরপর থেকে সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলে।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থরাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
২০১৮ সালে বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে কয়েক দফা আবেদন করা হয়; কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।