চাঁদপুরে ইলিশের আকাল, অন্য মাছের দখলে আড়ৎ

দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার তিন দিন পরও চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটে ইলিশের সরবরাহ বাড়েনি। পদ্মা ও মেঘনা নদীতে রূপালী ইলিশ ধরা না পড়ায় দেশের অন্যতম বৃহৎ এই ইলিশের অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের সরবরাহ তলানিতে নেমেছে। ফলে মাছঘাটে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। তবে এর বিপরীতে পাঙাশ, রুই, কাতলা, পোয়া, চিংড়ি ও আইড়সহ বিভিন্ন দেশীয় মাছের সরবরাহ বেড়েছে।
আজ শনিবার (৩ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বড়স্টেশন মাছঘাটে ইলিশের তেমন সরবরাহ চোখে পড়েনি। তবে জেলেরা পদ্মা-মেঘনা থেকে ধরা পাঙাশ, রুই-কাতলা ও পোয়া নিয়ে আসছেন এবং ভালো দামে বিক্রি করে খুশি হচ্ছেন।
পহেলা মে থেকে মাছঘাটে সব ধরনের মাছ বিক্রি শুরু হলেও দাম বেশি থাকায় ক্রেতারা ইলিশ কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে পাঙাশ, রুই, কাতলা ও চিংড়ির মতো মাছের বিক্রি বেড়েছে। বর্তমানে আড়তের সামনে ইলিশের স্তূপ না থাকলেও বড় আকারের পাঙাশ ও রুই-কাতলার সরবরাহ দেখা যাচ্ছে, যা চাঁদপুর মাছঘাটকে সরগরম রেখেছে।
চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর এলাকার জেলে মাসুদ মিজি জানান, নদীতে ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। তাই এখন আর ইলিশ ধরছেন না। জালের সাহায্যে পাঙাশ ও আইড় মাছ ধরছেন, যা আকারে বড় হওয়ায় লাভ বেশি থাকে এবং মাছঘাটে ভালো দাম পাওয়া যায়।
বড়স্টেশন মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী নবীর হোসেন বলেন, তাদের প্রধান ব্যবসা ইলিশ বিক্রি হলেও বর্তমানে ইলিশের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। অসময় হলেও এখন পাঙাশ, রুই-কাতলা পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পাঙাশ ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি এবং কাতলা এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় তা তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কুমিল্লা থেকে আসা ক্রেতা ফয়সাল জানান, বাস্তবে মাছঘাটে ইলিশের সরবরাহ খুবই কম ও দামও অনেক বেশি। তবে নদীর টাটকা পাঙাশ, পোয়া, রুই-কাতলা দেখে ভালো লাগছে ও সুযোগ পেলে কিনবেন।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর অভিযান কঠোর হয়েছে। জাটকা বড় হলে জেলেরা ইলিশ পাবেন। বর্তমানে সৃজনকাল না হওয়ায় ইলিশের সরবরাহ কম। তবে আশা করা যাচ্ছে, এক-দেড় মাস পর ইলিশসহ সব ধরনের মাছের সরবরাহ বাড়বে।