জেলা বিএনপিনেতাকে ছাত্রদলনেতার হুমকি!

সাতক্ষীরা কলারোয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বর্তমান জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আক্তারুল ইসলামকে পিটিয়ে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দিয়েছেন কলারোয়া পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব জি এম সোহেল। গতকাল সোমবার (৫ মে) বিকেলে কলারোয়া বাজারের কাছারি মোড় এলাকায় পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের নবগঠিত সার্চ কমিটির প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ হুমকি দেন।
ওই সমাবেশে জি এম সোহেল বলেন, ‘যারা কলারোয়ার নব-রাজনীতির সূচনা করতে যাচ্ছে এবং ৫ আগস্ট পরবর্তী জেলখানা থেকে এসে আওয়ামী মার্কা রাজনীতি পরিচালনা করতে চাইছে, তাদের প্রতিরোধ করার জন্য কলারোয়া ছাত্রদলই যথেষ্ট।’
জি এম সোহেল আরও বলেন, ‘ছাত্রদল চাইলে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে আক্তারুল ইসলামকে কলারোয়া থেকে বিতাড়িত করতে পারবে।’ তিনি সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে ৯ বছর দায়িত্বে থাকাকালে বিএনপির কর্মীদের কোনো উপকার না করা এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে কোনো ব্যানার না টাঙানোর অভিযোগ করেন।
ছাত্রদলনেতা জি এম সোহেল আরও অভিযোগ করে বলেন, আক্তারুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত জেনেও তারা ধৈর্য পরীক্ষা দিচ্ছেন, তবে তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। তিনি আক্তারুল ইসলামকে ‘কালোবিড়াল’ ও ‘নব রাজনীতির কুলাঙ্গার’ বলে আখ্যা দেন এবং আঁতাত করে পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন। আক্তারুল ইসলামকে সঠিক পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি। অন্যথায়, পিটিয়ে কলারোয়া থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন এই ছাত্রদল নেতা।
এ বিষয়ে সাবেক মেয়র গাজী আক্তারুল ইসলাম বলেন, তিনি পরপর দুবার পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়ে মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি এবং বহুবার মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর নিজ দলের কিছু দাঙ্গা সৃষ্টিকারী অশুভ শক্তি তার পিছু নিয়েছে। তিনি জেলা বিএনপিকে পুনর্গঠনের দায়িত্ব পাওয়ায় বিএনপির মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু দুষ্কৃতকারী আস্ফালন করছে।
হুমকির বিষয়ে আক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রদলের সোহেল একজন অল্প বয়স্ক ছেলে এবং তাকে অন্য কেউ ইন্ধন দিচ্ছে।’
হুমকির বিষয়ে অভিযুক্ত জি এম সোহেলের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একজন চিহ্নিত আওয়ামী লীগের দোসর আকবরকে আমার এলাকা গোপিনাথপুর ওয়ার্ড বিএনপির সার্চ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। এতে ছাত্রদলের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি এমন কথা বলেছি।’
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুল আরেফিন বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’