কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় মাছের নতুন প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত

কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় মাছের পঞ্চম প্রজননক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি লংগদু উপজেলার কাসালং চ্যানেলের মালাদ্বীপ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় একটি নতুন প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত হয়।
এর আগে এ লেকে কার্পজাতীয় মাছের চারটি প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত ছিল। এগুলো হলো- কাসালং চ্যানেলে মাইনীমুখ মাস্তানের টিলা সংলগ্ন এলাকা, কর্ণফুলী চ্যানেলে জগন্নাথছড়ি এলাকা, চেংগী চ্যানেলের নানিয়ারচর এলাকা এবং রীংকন চ্যানেলের বিলাইছড়ি এলাকা।
মূলত বিএফআরআই-এর রাঙ্গামাটিস্থ নদী উপকেন্দ্র কাপ্তাই লেকে মাছের উৎপাদন, সংরক্ষণ, কার্পজাতীয় মাছের পরিপক্কতা ও প্রাকৃতিক প্রজননের বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করে আসছে। প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ কাপ্তাই লেক দেশের অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড়। উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক প্রজনন অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত। উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন ছিলো ১৭,০৫৬ মে. টন। প্রায় ২৬,৬৮৮ জন মৎস্যজীবী ও তাদের পরিবার জীবিকার জন্য সরাসরি কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্ভরশীল।
কাপ্তাই হ্রদে বর্ষাকালে (সাধারণত জুন-জুলাই মাস) উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত, ঝড়ো বাতাস, প্রবল স্রোতে এবং পানিতে ঘূর্ণন তৈরি হলে কার্পজাতীয় মাছ প্রজনন করে থাকে।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদে প্রাকৃতিক প্রজনন বিষয়ে সর্বপ্রথম গবেষণা পরিচালিত হয় ১৯৮৬ সালে ও পরবর্তীতে ২০০৩-০৪ সালে। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রাকৃতিক প্রজনন বিষয়ে গবেষণায় বিএফআরআই এর রাঙ্গামাটিস্থ নদী উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা কাসালং চ্যানেলের মাস্তানের টিলা সংলগ্ন এলাকায় কার্পজাতীয় মাছের ডিমের সন্ধান পায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা পূর্বের চিহ্নিত প্রজননকেন্দ্র হতে প্রায় ছয় কিলোমিটার উপরের দিকে কাসালং চ্যানেলের মালাদ্বীপ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় নতুন প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, সংগ্রহকৃত ডিম থেকে রেণু উৎপাদনের হার ছিল প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ। গবেষক দলে ছিলেন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব মো. ইশতিয়াক হায়দার ও বি. এম. শাহিনুর রহমান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব মো. খালেদ রহমান ও জনাব মো. লিপন মিয়া।