নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন খাল দখলে জলাবদ্ধতার হুমকিতে ৫ লাখ মানুষ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি গুরুত্বপূর্ণ খাল দখল ও ভরাটের কারণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় পড়েছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালটি যদি দ্রুত দখলমুক্ত না করা হয়, তাহলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকা ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
ফতুল্লার পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন ‘কইললানি’ নামের এই খালটি দিয়ে ডিএনডি এলাকার উত্তরপাড়া, মাসদাইর, পঞ্চবটিসহ আশপাশের অন্তত ১০-১২টি পাড়া-মহল্লার পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। এক সময় এই খালটি ছিল প্রায় ২২ থেকে ২৩ ফুট প্রশস্ত এবং সেখানে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করত। কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকে খালের দুই পাশে দখল ও ভরাটের হিড়িক পড়ে। কেউ খালের ওপর দিয়ে রাস্তা বানিয়েছে, কেউবা বালু ফেলে স্থাপনা গড়েছে। ফলে আজ খালটি সংকুচিত হয়ে ১০ থেকে ১২ ফুট প্রশস্ত একটি সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এক সময়ের প্রশস্ত খালটি এখন প্রায় অদৃশ্য। কোথাও খালের ওপর দিয়ে দোকানপাট, কোথাও বাসাবাড়ির প্রবেশপথ, সব মিলিয়ে খালটি যেন ড্রেন বা নালায় পরিণত হয়েছে। এর ফলে বৃষ্টি হলেই আশপাশের এলাকায় পানি জমে যায়, রাস্তাঘাট ডুবে যায়, এমনকি ঘরবাড়ি এবং মসজিদের ভেতরেও পানি প্রবেশ করে।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে। তারা জানিয়েছে, খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে খালটি পুনরুদ্ধার করতে হবে। তাদের মতে, প্রশাসনের যদি এখনই কার্যকর উদ্যোগ না আসে, তাহলে আগামী বর্ষা মৌসুমে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে সবাইকে।

স্থানীয় বাসিন্দা ফতুল্লার পুলিশ লাইনের সেঞ্চুরি মসজিদের সামনে দোকানদার মনোয়ার হোসেন বলেন, এই খালটি একসময় অনেক বড় ছিল। এখন খালটি দখল করে রাস্তা বানানো হয়েছে, দোকান উঠেছে। বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়ে। পুরো এলাকায় হাঁটু পানি হয়ে যায়। এই খালটি দখলের কারণে আশপাশের প্রায় ১০-১২টি পাড়া-মহল্লার পাঁচ লাখ মানুষের জীবন এখন জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হওয়ার পথে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম বলেন, খালটি আমাদের সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত না হলেও খালটির পানি নিষ্কাশনের সঙ্গে আমাদের অনেক এলাকা জড়িত। দখলের কারণে আমাদের এলাকাও প্লাবিত হয়। প্রায় দুই বছর আগে এই খালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে দখলদাররা আবার খালটি দখল করে নেয়। আমরা খুব দ্রুতই অন্যান্য সরকারি দপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় এই খালটি দখলমুক্ত করতে কাজ করব।