শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একমাত্র বিকল্প ছিল। সবার ঐক্যবদ্ধ মতামতে তাঁকে আমরা সরকার প্রধান হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমরা চাই না উনি ব্যর্থ হোক। বিকল্প অন্য কাউকে দিয়ে রাষ্ট্রের সমস্যার সমাধান হবে— এমন প্রত্যাশা ও চিন্তা করতে চাই না। ফলে ড. ইউনূসকে সফল হতেই হবে। তিনি সফল না হলে বাংলাদেশের অন্য কারও পক্ষে জাতীয় ঐক্য নিয়ে সফল হওয়া কঠিন হবে— এমনটা মনে করেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। এছাড়া তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচন কবে হতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও খোলামেলা মতামত দেন। রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কার্যালয়ে এনটিভি অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের সিনিয়র রিপোর্টার মাহমুদুল হাসান।

এনটিভি অনলাইন : ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কেমন আছেন?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : তুলনা করলে তো ভালো আছি। যেহেতু আগে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় আমরা অধিকার বঞ্চিত ছিলাম, রাজনৈতিকভাবে আমরা নিপীড়ন-নিষ্পেষণের মধ্যে ছিলাম। সেই হিসেবে এখন আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি, কথা বলতে পারছি। কিন্তু সব অবস্থাতেই বর্তমানকে মেলাতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের যে প্রত্যাশা— সংস্কার, নির্বাচন ও বিচারের যে প্রত্যাশা— সেই হিসাব করতে গেলে চাওয়া-পাওয়া বা অনেক প্রত্যাশা নতুন পথ খুলেছে। সেই হিসেবে এক ধরনের সংগ্রামের মধ্যে আছি।

এনটিভি অনলাইন : সংস্কার নাকি নির্বাচন— এই নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। আসলেই কি জাতীয় নির্বাচন হবে?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : সরকার তো বলছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা মনে করি, আবহাওয়াগত একটা ব্যাপার আছে, রমজান আছে, সেজন্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হলে ভালো। আমি মনে করি, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় কাঙ্খিত সংস্কার ও ফ্যাসিবাদীদের দৃশ্যমান বিচার। এর মধ্যে দিয়ে যদি আমরা নির্বাচনে যাই তাহলে আমাদের আশা পূর্ণ হয়। ফলে আমি মনে করি, সরকার যেহেতু বলেছে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন দেবে। এ সময়ের মাঝামাঝি হলে ভালো হয়।

এনটিভি অনলাইন : স্থানীয় সরকার নির্বাচন নাকি জাতীয় নির্বাচন— কোন নির্বাচনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : স্থানীয় নির্বাচনটা আগে হলে ভালো হতো। নির্বাচন কমিশনের একটা পরীক্ষা হয়ে যেত। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা দেখা যেত। যেহেতু সরকারও এ বিষয়ে খুব দৃঢ় না, বিএনপিরও এ বিষয়ে আপত্তি আছে, আমরা এটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাই না। সরকারও যেহেতু জাতীয় নির্বাচনের দিকে হাঁটছে এবং প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিরও যেহেতু একটু অনিচ্ছা আছে, সেই হিসেবে জাতীয় নির্বাচন আগে হতে পারে।

এনটিভি অনলাইন : ড. ইউনূস সরকার ব্যর্থ হলে এর বিকল্প আমাদের কাছে কে আছে?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : দেখুন, প্রফেসর ইউনূস আমাদের কাছে একমাত্র বিকল্প ছিল। কারণ ঐক্যবদ্ধ মতামতে উনাকে আমরা সরকারপ্রধান হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমরা চাই না উনি ব্যর্থ হোক। বিকল্প অন্য কাউকে দিয়ে রাষ্ট্রের সমস্যার সমাধান হবে— এমন প্রত্যাশা ও চিন্তা করতে চাই না। ফলে ড. ইউনূসকে সফল হতেই হবে। তিনি সফল না হলে বাংলাদেশের অন্য কারও পক্ষে জাতীয় ঐক্য নিয়ে সফল হওয়া কঠিন হবে। যদিও তার অনেকগুলো ভুল সিদ্ধান্ত আছে, অনেকগুলো ত্রুটিপূর্ণ পদক্ষেপ আছে। আমরা মনে করি, সেগুলো উনি বিশ্লেষণ করে সংশোধন করে নিতে পারেন। এখনও সকল দল-মত-পথের মানুষের আস্থা আছে এবং উনার পক্ষ জাতীয় সংকট সমাধান করা সম্ভব।

এনটিভি অনলাইন : সুনির্দিষ্টভাবে যদি বলতেন কোনগুলো ড. ইউনূসের ভুল?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : প্রধান ভুল হচ্ছে আমি মনে করি, উনি দায়িত্বে আসার পর তার উচিৎ ছিল সব রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পক্ষ যেমন— বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া— সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকার পরিচালনা করা। হতে পারতো জাতীয় সরকার, হতে পারতো একটা গার্ডিয়ান কাউন্সিল করে সবার মতামতের ভিত্তিতে পরিচালনা করা। ঐক্যের জায়গাটা তিনি রক্ষা করেনি। দুই নম্বর হচ্ছে— ছাত্র ঐক্যটাও ধরে রাখা যায়নি। ছাত্রদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি তৈরি হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরে গেছে। সরকার পরিচালনার পাশাপাশি ছাত্রদের ঐক্যটাও ধরে রাখা উচিৎ ছিল। প্রশাসনিকভাবে দীর্ঘসূত্রিতা। যেকোনো অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। উনি যদি জরুরি অবস্থা দিয়ে হোক, পুলিশ-আর্মির সমন্বয়ে হোক, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারতেন, তাহলে মানুষের আস্থাটা আরও বেশি পেতেন। এই জায়গাটাতে উনি গুরুত্ব দেননি, তিনি মিস করে গেছেন।

আরও পড়ুন : কালের পরিক্রমায় লু’টেরা দলে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ

এনটিভি অনলাইন : গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলো। রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থন দিয়েছে। বর্তমান সরকার ৯ মাস পার করছে, এই সময়টা কিভাবে মূল্যয়ন করবেন?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : প্রথমত হচ্ছে— এই সরকার অপ্রস্তুত অবস্থায় টেকওভার করেছে। রাষ্ট্রটা একটা ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। দুই নম্বর হচ্ছে, এই অবস্থাটাকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা। সবাইকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে একটু সময় লেগেছে এবং সরকারকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এখনও সরকার পরিপূর্ণভাবে স্বাভাবিক হয়নি। এখানে নানা বঞ্চনা রয়েছে, বহু লোককে প্রমোশন দেওয়া হয়নি, বহু লোকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বহু লোককে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে, বাড়ি-ঘরে থাকতে পারেনি, তাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়ছে। অনেক লোকের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। অনেকেই কারাগারে ছিলেন। এদের বের করে আইনগভাবে ন্যায়বিচার, আইনানুগভাবে একটা রেমিডি দিয়েছে এই সরকার। এর জন্য একটা লম্বা সময় লেগেছে। তারপর যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার করা। এখানে শুধু রাজনৈতিক দলের নেতারাই অন্যায় করেনি। প্রশাসন, পুলিশ, কোর্ট— সর্বস্তরে অন্যায়ের বিভীষিকা তৈরি হয়েছে। বিশাল একটা পরিস্থিতির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। এরপর বন্যা, বিভিন্ন প্রকার আন্দোলন ও সংগ্রামের মুখে পড়তে হয়েছে। সরকারকে প্রায় ২০০ আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। ব্যাংকগুলোতে টাকা ছিল না। ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম ছিল। আমাদের বৈদেশিক আমদানি স্থবির ছিল। সরকারে অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে ৬-৭ মাস সময় দিয়ে হয়েছে। এর বাইরে সরকারের মূল যে কাজগুলো— বিশেষ আদালত গঠন করা, অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচার কাজ শুরু করা। আমাদের যে সংস্কারগুলো করা দরকার— সংস্কার কমিশন গঠন করা। জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা, নির্বাচন কমিশন গঠন করা। ব্যাপক একটা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়েছে। হ্যাঁ, এই কাজগুলো সরকারের জন্য একটা বিরাট চাপ ছিল, কষ্টকর ছিল।

এখন যেটা হয়েছে— সরকারের ৯ মাস হতে চলল, সরকারকে এখন আর ওই জায়গা থেকে দেখবে না। মানুষ দেখবে— সরকারের ৯ মাস পার হয়েছে, সংস্কার কখন হবে, বিচারগুলো দেখতে চাই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখেতে চাই। সর্বোপরি নির্বাচনের তারিখ বা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে নতুন সরকারর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটা বিষয় আছে। সব মিলিয়ে বলব না যে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ, বলব না যে সরকার এসব বিষয়ে উদাসীন আছে। আমি বলব, সরকার যথেষ্ঠ করেছে। সবচেয়ে বড় কথা দেশের অর্থনীতিতে একটা গতি তৈরি হয়েছে, রির্জাভ বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি কমেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও একটা দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করছি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটা হয়েছে— রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ছিল, আস্থার একটা জায়গা ছিল, এটা সরকার রক্ষা করতে পারেনি। এখানে উদাসীনতা ছিল। সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার মধ্যে অদক্ষতার লক্ষণ আমরা দেখতে পেয়েছি। নানা জন নানা কথা বলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সার্বিক বিষয়ে আমি মনে করি, সরকারের প্রতি অনাস্থা তৈরি মতো ঘটনা এখনও ঘটেনি। তবে সরকারের অনেক দুর্বলতা আমাদের চোখে ধরা পড়ছে। সরকার যদি দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে তা দূর করে এবং সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন— এই তিনটি বিষয়ে প্যারালালি এগিয়ে নিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে যদি একটা দৃশ্যমান রোডম্যাপ দিতে পারে, তাহলে সবার কাছে সাধুবাদ পাবে এবং সবার যে প্রত্যাশা সেটা কিছুটা হলেও পুরণ হবে।

আরও পড়ুন : আসছে নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি এবি পার্টির

এনটিভি অনলাইন : আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার মধ্যদিয়ে দলটিকে রাজনীতির মাঠে আবার ঐক্যবদ্ধ করে দেওয়া হলো কিনা— আপনি কি বলবেন?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : নীতিগতভাবে আমাদের যে অবস্থান, আমরা মনে করি, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে দমানো যায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল বলবেন কিনা— এটা হচ্ছে প্রধান প্রশ্ন। আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ কোনো বিচারে রাজনৈতিক দলের মধ্যে পড়ে না। হ্যাঁ, এটা একটা রাজনৈতিক দল ছিল। অতীতে তাদের একটা রাজনৈতিক ইতিহাস আছে। আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তাদের একটা ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় একটা দুর্বৃত্ত, খুনি দলে পরিণত হয়েছে, লুটেরা দলে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশের সব মানুষ একত্রিত হয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দলের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীরা পলিয়েছে। তাদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে এমপি-মন্ত্রী, তাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বাররা পর্যন্ত পালিয়ে গেছে। অনেকই আত্মগোপনে আছেন। একটা নিষিদ্ধ সংগঠন, আত্মগোপন সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তারা যদি পরিশুদ্ধ হয়ে ফিরে আসতে পারে তাহলে তাদের সাথে রিকনসিলিয়েশন সম্ভব। তারা যদি মনে করে নিষিদ্ধ, অপরাজনীতিতে থাকবেন, তাহলে তাদের রাজনীতি ফিরে আসতে লম্বা সময় লেগে যাবে। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা যদি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারা অব্যাহত রাখতে পারি, আওয়ামী লীগ আগের রূপে রাজনীতি ফিরে আসতে পারবে না।

এনটিভি অনলাইন : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে কথা হচ্ছিল। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হলো। এর আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়। সাধারণ মানুষও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। কি করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে? সরকারের কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : আমি আগেও বলেছি, এগুলো কেন হচ্ছে? দ্বিধা-বিভক্তির কারণে। ছাত্রদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি তৈরি হয়ে গেছে। আরেকটা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলাম। সেটা হচ্ছে— যেহেতু দীর্ঘদিন আমরা একটা বৈষম্যের মধ্যে ছিলাম, অনেকের দাবি-দাওয়া, আকাঙ্খা অপূর্ণ রয়ে গেছে, তা পূরণে জন্য তারা রাস্তায় নেমে এসেছে। সরকারের যদি একটা ব্যবস্থা থাকতো সব দাবি শোনার এবং দাবি শুনে তাদেরকে রিপ্লাই দেওয়ার। যদি বলতো— রাজপথে না নেমে আমরা একটা নির্ধারিত জায়াগা তৈরি করেছি। আসেন, সেখানে আমরা আপনাদের দাবি-দাওয়াগুলো শুনবো। সেখানেও তাদের রাজনৈতিক পরিপক্কতার ঘাটতি রয়েছে।

এনটিভি অনলাইন : আপনার দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে কি বলবেন? নির্বাচনের জন্য কতটুকু প্রস্তুত?

মজিবুর রহমান মঞ্জু : আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম এখন জোরদার করেছি। সামনে নির্বাচন, সেটা নিয়ে আমাদের প্রস্ততি চলছে। আসলে আমাদেরকে সেভাবে বিস্তৃত করতে পারিনি। নানা ধরনের বাধা-বিপত্তি ছিল। সরকারের নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে। নিবন্ধন আটকে দিয়েছিল। নিবন্ধন পেতে লম্বা সময় লড়াই করতে হয়েছে। নিবন্ধন পেয়েছি। দলের বিস্তৃতির জন্য আমরা প্রতিনিয়িত জেলা, উপজেলাগুলোতে সফর করছি। নতুন নতুন লোক আমাদের দলে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সরকারের নানা নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে আমাদের প্রায়ই ভূমিকা রাখতে হচ্ছে। বিভিন্ন পলিসি মেকিংয়ে আমাদের অংশগ্রহণ থাকছে। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি যারা আছেন, তারা আমাদের কাছ থেকে জানতে চায়, শুনতে চায়। মানে বিভিন্ন পলিসিতে আমাদের ডায়ালগ করতে হচ্ছে। খুব ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। এটাই গণতান্ত্রিক নীতি হওয়া উচিৎ। গণতান্ত্রিক রীতি মেনে সবাই যেন সবার মত প্রকাশ করার অধিকার, দলের কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার পায়। শুধু আমাদের দল নয়, সব দলেই একটা গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। এই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা একটা ভালো ও পরিবর্তনের রাজনীতি উপহার দিতে পারব।