মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে দেশি মাছের চাষ

মেহেরপুরে কৃত্রিম উপায়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শিং, মাগুর, কৈ, ট্যাংরা, পুঁটি ইত্যাদি মাছের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় ভোক্তাদের চাহিদাও রয়েছে। ফলে বাণিজ্যিকভাবে দেশি মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।
মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশি মাছ কম রাসায়নিক ব্যবহারেই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে চাষ করা যায়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং খরচও তুলনামূলক কম হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলায় দেশি মাছ চাষে তিনটি প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। বর্তমানে জেলায় ১৯ জন চাষি বাণিজ্যিকভাবে দেশি মাছ চাষে যুক্ত।
সদরের ঝাউবাড়িয়া গ্রামের শাহিন মল্লিক ২৪ বিঘা জমির ছয়টি পুকুরে দেশি মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। তিনি নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপনের পরিকল্পনাও করছেন, যাতে নিজের পাশাপাশি অন্য চাষিদেরও সহায়তা করতে পারেন। তার সাফল্য দেখে জেলার অনেক তরুণ-যুবক এ খাতে যুক্ত হচ্ছেন।
শাহিন মল্লিক বলেন, ২০১১ সালে প্রথম তিনি ক্যাটফিস জাতের মাছ চাষ শুরু করেন। বছরে কোটি টাকার বেচাকেনায় এ পর্যন্ত গড়ে বার্ষিক ২০ লাখ টাকা লাভ করে আসছেন। তবে মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে লাভ কিছুটা কমে গেছে। তিনি বলেন, এই মাছ বছরে একবার চাষ করা যায়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাধন চন্দ্র সরকার বলেন, দেশী প্রজাতির মাছ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের চাহিদা পূরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
সাধন চন্দ্র সরকার আরও বলেন, ‘জেলায় ১৯ জন মৎস্য চাষি বাণিজ্যিকভাবে দেশি প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। দেশি মাছের চাষ আমাদের জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে, যা পরিবেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। একজন সফল চাষি বার্ষিক ১৫ টন দেশি মাছ উৎপাদন করে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারেন। প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ব্যবহার ও সরকারি সহায়তার মাধ্যমে এই খাত আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে।’