সাবেক বিচারপতি খায়রুল ও রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজধানী ঢাকায় ছয় তলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লট নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদাসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (৬ আগস্ট) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন— দুদকের উপ পরিচালক (মিডিয়া) আকতার হোসেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে জানা গেছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন— রাজউকের সদস্য (অর্থ) ও সদস্য (এস্টেট) আ ই ম গোলাম কিবরিয়া, সদস্য (অর্থ) মো. আবু বক্কার সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সদস্য (এস্টেট) আখতার হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক যুগ্ম সচিব ও সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম ও সদস্য (প্রশাসন ও ভূমি) নাজমুল হাই।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালনকালে তার স্বীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে উত্তরাধিকার হিসেবে রাজধানী ঢাকায় তার পৌনে ১৮ কাঠা জমিতে একটি ছয় তলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও রাজউকের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় অসৎ উদ্দেশ্যে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য প্রদানপূর্বক রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নিয়ে নিজে লাভবান হয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার নিজ নামে ঢাকা শহরে পৈত্রিক বাড়ি ও জমি থাকা সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে প্রতারণার আশ্রয় নেন। মিথ্যা তথ্য প্রদান করে বিধি ১৩ লঙ্ঘন করে হলফনামা দাখিল করে রাজউকের ১০ (দশ) কাঠা প্লট আত্মসাৎ করার মাধ্যমে অপরাধ করেছেন প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। শুধু তাই নয় বরাদ্দকৃত প্লটের সুদসহ প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ না করায় ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওই প্লট বাতিলও হয়েছিল। কিন্তু আসামিরা সুদের চার লাখ ৭৪ হাজার টাকা মওকুফ করে সরকারে আর্থিক ক্ষতিসাধন করে পুনরায় প্লট বরাদ্দে সিদ্ধান্ত দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদাধিকারী পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত ও বহাল থাকা অবস্থায় নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।