স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তনের সুফল শিগগিরই পাওয়া যাবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যার সুফল আগামী দিনগুলোতে পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা জানান, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ১৩ হাজার ৮১১ জন আহত হয়েছেন। গেজেটভুক্ত ১২ হাজার ৪২ জন জুলাই যোদ্ধাকে স্বাস্থ্য কার্ড দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সাত হাজার ৩৬৩ জনকে কার্ড বিতরণ করা সম্পন্ন হয়েছে। এই কার্ডের মাধ্যমে তারা আজীবন সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।
আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার ৭৮ জনকে বিদেশে পাঠিয়েছে। এছাড়াও, দেশীয় চিকিৎসকদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, নেপাল, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য ও থাইল্যান্ড থেকে ২৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাংলাদেশে এসে চিকিৎসা দিয়েছেন। পক্ষাঘাতগ্রস্ত আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চীনের সহায়তায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অত্যাধুনিক রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ জন রোগীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যখাতে জনবল সংকট সমাধানে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রায় সাত হাজার চিকিৎসককে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টি করে ব্যাপক পরিসরে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজার চিকিৎসক নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। ৪৫তম, ৪৬তম ও ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে আরও তিন হাজার ৫০০ জনেরও বেশি চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।
স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের জন্য নতুন আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, চীনের অনুদানে রংপুর বিভাগে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৫০০ থেকে ৭০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
নূরজাহান বেগম জানান, হার্টের রিংয়ের মূল্য ৩৬ শতাংশ কমানো হয়েছে ও ক্যান্সার নিরোধক ওষুধের ওপর কর কমানো হয়েছে। এছাড়াও, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় সরকার সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। হতাহত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মানসিক আঘাতের চিকিৎসায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে হটলাইন ও বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।