ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর রামপুরায় ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি করাসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় তিনটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
একই সঙ্গে গ্রেপ্তার রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আগামী ১৭ আগস্ট আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
হাবিবুর ছাড়া বাকি তিনজন হলেন-খিলগাঁও জোনের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান এবং রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
আজ রোববার (১০ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার, মঈনুল করিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রামপুরা এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।
তিনটি অভিযোগে বলা হয়, এক. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রামপুরা এলাকায় একটি ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে পিস্তল দিয়ে ছয় রাউন্ড গুলি করা হয়। এতে সে আহত হয়ে ঝুলে থাকে। দুই. বনশ্রী ওইচ ব্লকে ছয় বছরের শিশু দাদির কোলে ঘরে বসে ছিল। পুলিশের গুলিতে শিশুর মাথা ভেদ করে দাদি মায়া বেগমের পেটে লাগে। দাদি মায়া বেগম মারা যান। শিশুটি সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ব্রেনে আঘাতের কারণে শিশুটি কথা বলতে পারে না এবং তিন. এছাড়া পুলিশের গুলিতে আরও এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ওয়ারলেসে লুথার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশ দেন। সে রেকর্ড জমা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই আমির হোসেন জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলেন। বাসার কাছে তখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পড়েন তিনি। এ সময় পুলিশ গুলি করা শুরু করলে দৌড়ে নির্মাণাধীন একটি ভবনের চারতলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে আমির হোসেনকে পেয়ে বারবার নিচে লাফ দিতে বলেন। একপর্যায়ে ভয়ে আমির হোসেন লাফ দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনটির রড ধরে ঝুলে থাকেন। তখন তৃতীয় তলা থেকে পুলিশ আমির হোসেনের পায়ে ছয়টি গুলি করে। পুলিশ চলে গেলে আমির হোসেন তৃতীয় তলায় পড়ে যান। তখন তার দুই পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।