তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নীলফামারীর নিম্নাঞ্চলে বন্যা

উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে পানির এ বিপদসীমা রেকর্ড করা হয়। এতে নীলফামারীর নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে।
এর আগে, বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে পানি প্রথমে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে। পরে কিছুটা কমলেও রাতের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ভোরে তা ১১ সেন্টিমিটার ছাড়িয়ে যায়। টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় বিপৎসীমার ওপরে পানি প্রবাহিত থাকায় নীলফামারীর নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ২০টি গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। এছাড়া তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের অন্তত ১২টি গ্রাম ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল খালেক জানান, বারবার বন্যায় ধান, পাট, মাছ সব নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।
কেল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, সকাল থেকে ঘরের ভিতরে পানি ঢুকে পড়েছে। চুলো পর্যন্ত জ্বালাতে পারিনি। শুকনো খাবার খেয়ে আছি।
ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরস্বর, বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার কয়েকটি চ্যানেল বের হয়ে আবাদি জমি প্লাবিত করেছে। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ দিয়ে চ্যানেল বন্ধের চেষ্টা করছেন। পাউবোও সহায়তা করছে। চরাঞ্চলের প্রায় ২০০ পরিবারের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। আগামী দুই দিন ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকতে পারে। চলতি মৌসুমে এটি তিস্তায় তৃতীয় দফা বন্যা। এর আগে, ২৯ জুলাই ও ৩ আগস্ট নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল।