সংসদে ৫০ শতাংশের বেশি নারী প্রতিনিধিত্ব চান মঈন খান
জাতীয় সংসদে ৫০ শতাংশের বেশি নারী প্রতিনিধিত্ব কেন থাকবে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। রোববার (১৭ আগস্ট) গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে ‘জুলাই অভ্যুত্থান এবং নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন।
খান ফাউন্ডেশন এই সেমিনারটির আয়োজন করে।
ড. মঈন খান বলেন, দেশের প্রায় ৪০ লাখ নারী পোশাক কারখানায় কাজ করে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫০ বা ১৫১ জন নারী কেন প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না। তিনি মনে করেন, সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন না হলে শুধু সেমিনার করে নারীর মুক্তি বা সমতার আন্দোলন সফল হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, নারীদের মনোনয়ন দিলে তারা পাশ করতে পারবে না— এমন ধারণা ভুল। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই জয়-পরাজয় তাদের জনপ্রিয়তার ওপর নির্ভর করে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও বেশি নারীকে মনোনয়নের সুযোগ দিতে হবে।
মঈন খান বিশ্বজুড়ে নারীদের ভোটের অধিকারের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, পশ্চিমা বিশ্বে মাত্র ১০০ বছর আগে নারীরা এই অধিকার পেয়েছে। এমনকি সুইজারল্যান্ডের মতো আধুনিক রাষ্ট্রেও নারীরা ১৯৭১ সালে ভোটের অধিকার পায়, যেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।
মঈন খান আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো সচেতনভাবে আরও বেশি সংখ্যক নারী প্রার্থীকে সুযোগ দেবে। যদিও কোনো রাজনৈতিক দলই এখনো ৩০ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারেনি, তবুও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে যে বাধা দেওয়া হয়েছে, তা দূর করে নারীর অধিকার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ দেওয়াই একমাত্র সমাধান। তিনি বলেন, আমি বলছি না ১০০টা আসন দিতে হবে। কিন্তু এর সমাধান করতেই হবে।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই বলেন, নারী সংস্কার কমিশনে অনেক সুপারিশ করা হলেও সেগুলোর কোনোটিই পরবর্তীতে আলোর মুখ দেখেনি, যা খুবই দুঃখজনক।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণা বিশ্লেষক নওশীন খান। এছাড়া, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা সেমিনারে অংশ নেন।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন, জেএসডির তানিয়া রব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ড. মাহদি আমিন, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ অধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, মুনজুল আলম পান্না, কাজী জেরিন, দিপ্তি চৌধুরী প্রমুখ।