বরখাস্ত এসআইকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

রাজশাহীতে বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হাসানকে (৩৫) গণপিটুনির পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয়রা। শনিবার (২৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর হজোর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগ ছিল।
পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালে নিয়োগ পাওয়া এসআই মাহবুব প্রথমে মতিহার থানায় যোগ দেন। পরে ২০১৬ সালে তিনি নগর গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) যোগ দেন। চাকরির শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া আচরণ, হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাতে গণপিটুনির শিকার হওয়ার পর হাসানকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকার ও ছাত্রশিবিরের মহানগরীর সাবেক সভাপতি খাইরুল ইসলাম।
জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মাহবুব হাসান বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠান এবং সাধারণ মানুষকেও হয়রানি করেন।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ডিবিতে কর্মরত থাকাকালে হাসান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের পাশাপাশি চাঁদাবাজির মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। নগরের রেলগেট এলাকার বাসিন্দা রাজিব আলী রাতুল ও তার পরিবার এ ধরনের হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, গণপিটুনির পর তাকে আটক করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমাদের থানায় তার নামে কোনো মামলা নেই। পরে তাকে বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, হাসানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত চলছে। বর্তমানে তাকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, মাহবুব হাসান সর্বশেষ নগর ডিবিতে কর্মরত ছিলেন। পরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তাই তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমাদের কাছেও সীমিত।