বিএনপির শোকজের জবাবে যা বললেন ফজলুর রহমান
বিএনপির শোকজ বা কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা জানান, উনি (ফজলুর রহমান) এই সংক্রান্ত চিঠির জবাব লিখিতভাবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। বিশেষ বার্তা প্রেরক সেটা জমা দিয়ে এসেছেন। এখন উনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন না। অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের নিজস্ব প্যাডে চার পৃষ্ঠার এই জবাবে দলের তরফ থেকে যা জানতে চাওয়া হয়েছে তা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে জানান তার সহধর্মিনী। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর জবাবটি লেখা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, তারা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান কারণ দশানো নোটিশের জবাবের একটি খাম পেয়েছেন। জবাবটি চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও গতকাল ফজলুর রহমানের অনুরোধে সময়সীমা চব্বিশ ঘণ্টা বৃদ্ধি করে বিএনপি, যা শেষ হবে আজ রাত ৯টায়। লিখিত জবাবে ফজলুর রহমান বলেছেন, আমার প্রিয় দল বিএনপির ক্ষতি হয় এমন কোনো কথা বা কাজ আমি করিনি এবং করবও না। জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে বিচার বিবেচনার প্রতি আমার সর্বোচ্চ আস্থা আছে। আমি আশা করি, সুবিচার পাব এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি সর্বদা অনুগত থাকব। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অনবরত ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় দলটি। ফজলুর রহমানের ঢাকার ঠিকানায় এ নোটিশ পাঠানো হয় বিশেষ বার্তা প্রেরকের মাধ্যমে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এই নোটিশে বলা হয় যে, আপনি জুলাই-আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে আসছেন এবং আত্মদানকারী শহিদদের নিয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা সম্পূর্ণরূপে দলীয় আদর্শ ও গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নিয়ে আপনার বক্তব্য জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আপনার বক্তব্য দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার সুপরিকল্পিত চক্রান্তের প্রয়াস বলে অনেকেই মনে করে। নোটিশে বলা হয়, এমনকি আপনি জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত দিয়ে কথা বলছেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির সাড়ে চারশোর অধিক নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতার প্রায় দেড় হাজারের অধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং ত্রিশ হাজারেরও অধিক মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার এ ধরণের বীরোচিত ভূমিকাকে আপনি প্রতিনিয়ত অপমান ও অমর্যাদা করছেন।
এতে আরও বলা হয়, এই ধরণের উদ্ভট ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্যের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ দেখিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।