‘ইসির সক্ষমতা নিয়ে আমাদের সংশয় রয়েছে’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে আমাদের সংশয় রয়েছে, নির্বাচন কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে আমরা প্রশ্ন করেছি। কারণ, যদিও নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তবুও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্তরে দোসররা বসে আছে, যারা অবাধ নির্বাচন বিঘ্নিত হয়, না করা যায়- সেটা করতে নানা ধরনের কলাকৌশল এবং সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
আজ রোববার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দুই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে স্বচ্ছতার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন এবং অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রোডম্যাপ অনুযায়ী তারা নির্বাচন নিয়ে কাজ করছেন এবং পিআর পদ্ধতি নিয়ে কিছু দল যে বক্তব্য দিয়েছে, সেটাও তাদের জানা।
রিজভী বলেন, আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমাদের নেতারা এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন। সাংবিধানিক দায়িত্ব অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তাদের কাজ করছে।
রিজভী আহমেদ বলেন, মূলত আমাদের আলোচনা ছিল ভিশন-২০৩০ নিয়ে, যেখানে প্রবাসীদের ভোটাধিকার সংক্রান্ত একটি প্রতিশ্রুতি ছিল। আমরা জানতে চেয়েছি প্রবাসীরা কি পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবে কিনা। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিষয়ে তারা কাজ করছেন। এ ছাড়া, সীমানা পুনর্নির্ধারণের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কেও কমিশনের বক্তব্য আমরা শুনেছি। তবে, আমরা কোনো নির্দিষ্ট আসন বা এলাকা নিয়ে কথা বলিনি। আমরা সামগ্রিক প্রস্তুতির বিষয়েই জানতে এসেছিলাম।
জাতীয় পার্টির নিবন্ধন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, না, এসব নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার, তারা সংবিধান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, আমরা স্পেসিফিক কিছু বলিনি। এখানে ইন্ডিভিজুয়াল যারা এগ্রি হচ্ছেন, তাদের কাছ থেকে কমিশন পার্সোনাল হিয়ারিং নিচ্ছেন। পপুলেশন ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ইউনিট—এই দুই বিষয়ে সমন্বয় রেখেই কাজ করছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি জাতীয় পার্টির নিবন্ধনের বিষয় ও গণঅধিকার পরিষদের প্রধানের ওপর হামলার বিষয়ে রিজভী বলেন, জাতীয় পার্টির নিবন্ধনের বিষয় নিয়ে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন কারো নিবন্ধন করা না করা, কি প্রক্রিয়ায় করবেন না করবেন, সেটার বিষয়ে সামগ্রিকভাবেই সংবিধান কর্তৃক তার যে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতার আলোকে তারা সেটা বিবেচনা করবে। তারা সেই দায়িত্বটা পালন করবে। এটা নির্বাচনের অন্তরায় নয়। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এমন ঘটনা ঘটে, কিন্তু তাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয় না। তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরের ওপর হামলা নিন্দনীয়। তার রাজনৈতিক পরিচিতি আছে, তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। আমরা এর নিরপেক্ষ তদন্ত চাই এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
আগামী নির্বাচন এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু হবে বলে বিএনপি বিশ্বাস করে কিনা, জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা যতবার এসেছি এবং তাদের পদক্ষেপগুলো দেখেছি, তাতে আমরা আশা রাখি, এই কমিশন একটি সুষ্ঠু, ইনক্লুসিভ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে। এখন পর্যন্ত তাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব আমরা দেখিনি।