নির্বাচন ছাড়া দ্বিতীয় পন্থা চিন্তা করলে দেশের ভয়াবহ ক্ষতি হবে : আমীর খসরু

নির্বাচন ছাড়া দ্বিতীয় পন্থা চিন্তা করলে দেশের ভয়াবহ ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে ফিল্টারেশন প্রসেস। এই প্রসেসের মাধ্যমে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন হয়; আর দ্বিতীয় কোনো পন্থা নেই। আর যদি অন্য পন্থা চিন্তা করেন, তবে এটা আগামী দিনে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতি নিয়ে আসবে। সুতরাং আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রথম বর্ষ যুগপৎ আন্দোলন শরিক দল’- শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আমীর খসরু এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং একটার পর একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে যেতে হবে। তিনি বলেন, শুধু রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক করলে চলবে না, অর্থনীতিকেও গণতান্ত্রিক করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে অর্থনীতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশীদার হতে হবে। কোনো একক গোষ্ঠিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে অর্থনীতি চালানো যাবে না।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অর্থনীতি সবার জন্য হতে হবে। প্রত্যেক নাগরিক যাতে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করছি আমরা। নারী থেকে শুরু করে রিটায়ার্ড করা ৬০ বছরের মানুষকেও কাজে লাগাতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, প্রত্যেক নাগরিক যাতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার ভূমিকা রাখতে পারে, সেই চিন্তা করছি। এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নাগরিকদের যখন আয় বাড়বে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে, তখনই তারা সুনাগরিক হবে। তারা ট্যাক্স দেবে। তখন ট্যাক্সের টাকা দিয়ে দাবি করতে পারবে- আমার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এটা করা যাবে না, সেটা করা যাবে না। আমার ট্যাক্সের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতে হবে বাংলাদেশের জন্য।
আমীর খসরু বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনের কৃতিত্ব নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এটি সারা বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলাফল। রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মালিক জনগণ, তারা সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কৃতি বদলাতে হবে। সহনশীল হতে হবে। অপরের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেও তার প্রতি, তার মতের প্রতি সম্মান জানাতে শিখতে হবে। ঐতিহাসিকভাবে একটা জিনিস প্রতিষ্ঠিত, যেসব দেশ বিপ্লবোত্তর সময়ে তাড়াতাড়ি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে, সেসব দেশ ভালো করছে। আর যেসব দেশ বিপ্লব পরবর্তীতে এই ধরনের কাজ করেনি, তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বিধা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চলছে, সেই দেশগুলোতে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সেই দেশগুলোতে সমাজ বিভক্ত, সেই দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, গণতন্ত্র তো দূরের কথা। এই জন্য আমাদের এক বছর অলরেডি অতিরিক্ত হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হবে, ততক্ষণ জনগণের অধিকার, মালিকানা, স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা কিছুই থাকবে না। দিনের শেষে দেখবেন একটা সাংঘর্ষিক জাতি হিসেবে আমরা একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ করছি।