তেঁতুলিয়া নদীজুড়ে অবৈধ বেহুন্দি জাল, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

পটুয়াখালীর বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীজুড়ে নিষিদ্ধ বেহুন্দি জালের ব্যাপক ছড়াছড়ি। নদীর বাতির খাল, চন্দ্রদ্বীপের খানকা, নিমদীর চর এবং ধুলিয়া পয়েন্টে শতশত অবৈধ জাল পেতে রাখা হয়েছে। এসব জালের সূক্ষ্ম ফাঁসে মাছের ডিম ও রেণু পোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জলজ প্রাণী আটকে মারা পড়ছে, যা নদীর মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিয়ম মেনে মাছ শিকার করা জেলেরা জানান, বেহুন্দি জালে পানি ছাড়া সবকিছুই আটকে যায়। এর ফলে সব প্রজাতির মাছ, তাদের ডিম ও পোনা, এমনকি বিভিন্ন জলজ পোকামাকড়ও ধ্বংস হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন যে, কিছু অসাধু জেলে ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে এই নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চালানো হলেও বেহুন্দি জালের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।
চন্দ্রদ্বীপের জেলে মো. বাবুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নৌ পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে এক শ্রেণির নামধারী জেলে নদীর মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করছে। এতে দিন দিন তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ কমে যাচ্ছে এবং আমাদের মতো প্রকৃত জেলেদের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ছে।
বাউফলের পরিবেশ আন্দোলনের নেতা এম এ বাশার বলেন, এই জাল শুধু মাছের প্রজনন ধ্বংস করছে না বরং নদীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপরও ভয়াবহ বিপর্যয় নামিয়ে আনছে। যদি এখনই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তেঁতুলিয়া নদী মাছশূন্য হয়ে পড়বে।
উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, ‘আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে অভিযান চালানো কষ্টসাধ্য। তারপরও আমি খুব দ্রুত অভিযান পরিচালনা করব।’
কালাইয়া বন্দর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আল মামুন ছুটিতে আছেন বলে জানিয়েছেন। দায়িত্বে থাকা এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক মাসোয়ারা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা প্রায়ই অভিযান চালাই, কিন্তু লোকবল সংকটের কারণে নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হয় না।’