দিনভর আলোচনায় নিউইয়র্ক বিমানবন্দরের ঘটনা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গেছেন। নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে তার সফরসঙ্গীদের হেনস্তার ঘটনা মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দিনভর আলোচনায় ছিল।
সফরসঙ্গীদেরকে হেনস্তার ঘটনা নিয়ে দেশ বিদেশে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাকর্মীদের কেন বিমান বন্দরে দেখা যায়নি এ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মির্জা ফখরুল নিউইয়র্ক বিমান বন্দরের ৪ নম্বর গেট দিয়ে বের হয়েছেন। অন্যদিকে নেতাকর্মীরা অপেক্ষায় ছিলেন ৮ নম্বর গেটে।
নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিস কমিউনিকেশন ফলে মির্জা ফখরুল বিমান বন্দর থেকে বের হওয়ার সময় নেতাকর্মী শুন্য হয়ে পরেন।
জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া স্টেট বিএনপির সভাপতি ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য শাহ ফরিদ এনটিভিকে বলেন, ১৬ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আওয়ামী লীগ। আগামী ২৬ তারিখ জাতি সংঘের সদর দপ্তরের সামনে দেখতে পারবেন বিএনপির অবস্থান কতটা শক্তিশালী।
বিমান বন্দরে বিএনপির মহাসচিবকে স্বাগত জানানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে এক মিস কমিউনিকেশন হয়েছে। এখানে বলার কিছুই নেই। সময় হলো আরও কিছু জানতে পারবেন।
এদিকে মঙ্গলবার এক ফেসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুল লিখেছেন, নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে যা ঘটেছে, তা আবারও প্রমাণ করল, আওয়ামী লীগ তাদের অন্যায়ের জন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করে না।
মির্জা ফখরুল আরও লেখেন, আওয়ামী লীগ আজ পর্যন্ত যা অন্যায় করেছে, সবকিছুর বিচার আইনের মাধ্যমে হবে। দল ও দেশের স্বার্থে ধৈর্য ধরুন।
এর আগে নিউইয়র্কে পৌঁছানোর পর এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হয়। নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের চার নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে এ ঘটনায় সিলেট জেলা যুবলীগের সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরীকে আটক করে নিউইয়র্ক পুলিশ।
আখতার হোসেনের সামনেই হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে যাওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। সফরসঙ্গী হিসেবে আরও রয়েছেন জামায়াতে কমিউনিকেশন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
এ ঘটনায় তাসনিম জারা লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া ও গালিগালাজ করা হয়েছে। এটি ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে এই হামলা হয়েছে। আখতার হোসেন এমন এক দলের প্রতিনিধি, যে দল ফ্যাসিবাদের কাঠামো ভাঙতে কাজ করছে।
ডা. তাসনিম জারা আরও লিখেছেন, এই হামলা পরাজিত শক্তির ভয় ও হতাশার প্রমাণ। এতে আখতার হোসেন দুর্বল হবেন না, বরং তার দৃঢ়তা আরও বাড়বে।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।