টিকটক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে দেশের ব্যবহারকারীদের বিশেষ স্টেম ফিড চালুর ঘোষণা করেছে ভিডিওভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে বিশেষ এ স্টেম ফিড চালুর ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, টিকটকের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও ডিজিটাল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকা কনটেন্ট ক্রিয়েটররা। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে শহর, গ্রামাঞ্চল ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকার মধ্যে শিক্ষাদানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রযুক্তির ভূমিকা তুলে ধরা হয়।

এই ‘স্টেম ফিড’ হলো টিকটক অ্যাপের একটি নতুন ও নির্দিষ্ট ডিজিটাল স্পেস, যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতবিষয়ক কনটেন্টগুলো আলাদাভাবে দেখা যাবে। টিকটকের এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের কমিউনিটির জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ তৈরি করবে।

স্টেম ফিড টিকটক অ্যাপের একটি নির্দিষ্ট ডিজিটাল স্পেস, যেখানে শুধু স্টেম-এর বিষয়গুলো সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য ও ভালো মানের কনটেন্ট পাওয়া যাবে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও এখন টিকটকের এই ফিডে মানসম্পন্ন স্টেম কনটেন্ট খুঁজে নিতে পারবে। প্ল্যাটফর্মটি #STEMTok নামে একটি হ্যাশট্যাগও চালু করেছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও শিক্ষাবিদরা এই হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করে স্থানীয় ভাষাতে স্টেম কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন, যা সহজলভ্য হবে।

এই উদ্যোগ কীভাবে সরকারের ডিজিটাল শিক্ষার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে পারে, সে বিষয়ে অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়। মানসম্পন্ন ডিজিটাল শিক্ষা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তি, শিক্ষকদের জন্য সহায়ক মাধ্যম এবং নিরাপত্তার নীতিমালার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া, স্থানীয়ভাবে উপযোগী কনটেন্ট দেখানো এবং শিক্ষা খাতে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করা নিয়েও আলোচনা করা হয়।

উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা কৌতূহলী ও সৃজনশীল। যদি এই সৃজনশীলতাকে আমরা কোনো নিরাপদ আর নির্ভরযোগ্য মাধ্যমের সাথে যুক্ত করতে পারি, তখন সমস্যার সমাধান এবং উদ্ভাবনের চর্চা করা সম্ভব হয়। টিকটকের স্টেম ফিডের মতো টুলস শিক্ষা গ্রহণকে আকর্ষণীয় করে তুলে এবং স্থানীয় ভাষায় মানসম্পন্ন শিক্ষা সহজেই পৌঁছে দিতে পারে।

টিকটকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের হেড অফ পাবলিক পলিসি ও গভর্নমেন্ট রিলেশনস, ফেরদৌস মোত্তাকিন বলেন, স্টেম ফিড এই উদ্যোগটি বাংলাদেশে কমিউনিটির জন্য শিক্ষাকে আরও সহজ, আকর্ষণীয় এবং নিরাপদ করবে বলে আমি মনে করি। অভিভাবক, শিক্ষক ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, এই প্ল্যাটফর্মটি ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও তরুণদের ক্ষমতায়নে দেশের লক্ষ্যকে সহায়তা করবে।

প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টিকটক বিভিন্ন টুল নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘ফ্যামিলি পেয়ারিং ফিচার’, ‘টাইম-এওয়ে শিডিউল’, ‘টিন নেটওয়ার্ক ভিসিবিলিটি’ ও নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক ফিচার, যা সুস্থ ডিজিটাল অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক।

টিকটকের গ্লোবাল কমিউনিটি গাইডলাইন অনুযায়ী স্টেম ফিড পরিচালিত। এই ফিডের কনটেন্টগুলো শিক্ষামূলক, নির্ভরযোগ্য ও বয়স-উপযোগী বিষয়বস্তু হওয়ায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং নীতিনির্ধারকরাও নিশ্চিন্তে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে পারবেন।

সরকার, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও তরুণ নির্মাতাদের একত্র প্রচেষ্টায় শিক্ষার প্রসারে প্রযুক্তির অবদানকে তুলে ধরে স্টেম ফিড বাংলাদেশের ডিজিটাল যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। টিকটকের মতো এমন উদ্যোগ শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য দূর করবে এবং একই সঙ্গে আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।