চুরির টাকা নিয়ে বাহাদুরি করছে রিজাল : অর্থমন্ত্রী

বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া রিজার্ভের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংক চুরির এ অর্থ নিয়ে বাহাদুরি করছে। এটা ঠিক না। এ অর্থের মালিক বাংলাদেশ। মালিককে (বাংলাদেশ) এ অর্থ ফেরত দিতেই হবে।
অর্থমন্ত্রী আজ সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিপাইনের সঙ্গে সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে না। এ প্রতিবেদন প্রকাশ হলে কেউ সুবিধা পেতে পারেন। এটা আমরা দিতে পারি না।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ফিলিপাইনের আদালতে আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় আছি। চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকার তদন্ত কমিশন গঠন করে। এ কমিশন এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছে। এ প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী একাধিকবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক সাইবার চক্রের হ্যাকাররা সুইফট কোড জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে। বিপুল পরিমাণ এ অর্থের মধ্যে স্থানান্তরিত করে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে (আরসিবিসি) পাঠানো হয়। আর শ্রীলঙ্কার প্যান এশিয়ান ব্যাংকে যায় ২০ মিলিয়ন ডলার।
সুইফট কোডের মাধ্যমে অভিনব এই চুরির পরপরই শ্রীলঙ্কার অর্থ ফেরত পাওয়া গেলেও ফিলিপাইনে আসা সব অর্থ উদ্ধার করা যায়নি। আট কোটি ১০ লাখ ডলারের অধিকাংশই রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে দেশটির বিভিন্ন স্থানের জুয়ার টেবিলে চলে যায়। এভাবেই ওই টাকা আইনগতভাবে বৈধ টাকায় (সাদা টাকা) পরিণত করেছিল চোররা।
পরবর্তীকালে ফিলিপাইনের সিনেট কমিটির শুনানিতে অর্থপাচারে সম্পৃক্ত ক্যাসিনো মালিক কিম অং দেড় কোটি ডলার ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিন ধাপে তিনি ওই টাকা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা দেন তিনি। পরে এই অর্থ ফেরত পেতে ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি আইনি নথি ও প্রতিবেদন লিপিবদ্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছিল।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘বাংকো সেন্ট্রাল এনজি ফিলিপিনাসকে’ (বিএসপি) বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি হওয়া টাকার এক কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার ডলার ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশটির একটি আঞ্চলিক আদালত।