১০ সেকেন্ড দেরি হলেই আমি শেষ হতাম : হান্নান আজাদ

জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অলংকার নিকেতনের কর্ণধার এম এ হান্নান আজাদ বলেছেন, ডাকাত দল যদি আর ১০ সেকেন্ড সময় পেত, তবে তারা আমাকে তুলে নিয়ে যেত। আমাকে শেষ করে দিত। আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নিউ ইস্কাটন রোডের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ব্যবসায়ীদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাজুস এবারের ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছে।
এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ভোরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে প্রায় ৩০ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত আমার বাসায় হামলা চালায়। এই সময় বাসা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পাশাপাশি আমাকে অপহরণের চেষ্টা করে। কিন্তু পারেনি। আমাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এলাকাবাসী রক্ষা করেছে। তারা (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এলাকাবাসী) যদি আরও ১০ সেকেন্ড দেরি করত, তবে সশস্ত্র ডাকাত দল আমাকে তুলে নিয়ে যেত। আমাকে শেষ করে দিত।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুজনের ওপর ও তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার চেষ্টা হয়। যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয় বলে জানায় বাজুস।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি রিপনুল হাসান জানান, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেশে ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতি হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই ঘটেছে ১১টি। খুলনায় চারটি ও পটুয়াখালীতে দুটি ঘটেছে। এ ছাড়া সাভার, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও হবিগঞ্জেও চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আশুলিয়া সাভারে ডাকাতির সময় ডাকাতদের গুলিতে একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী নিহত হন। বনশ্রীতে সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হন। গত এক বছরে এই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ৪৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, সরকারি নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও সিসিটিভি স্থাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
বাজুসের পক্ষ থেকে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে সশস্ত্র প্রহরার দাবি এবং চুরি-ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আহ্বান জানানো হয়। সংগঠনটি জানায়, নিরাপত্তাহীনতা কাটাতে না পারলে ১৫ এপ্রিলের পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।