রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোশাক নিয়ে ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক, পুলিশ ও এক শিক্ষকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা গেইটে এই ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামে ফেসবুক গ্রুপে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্ট্যাটাস দেন এক ভুক্তভোগী।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানিয়ে আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ফোরাম (আরইউডিএফ)।
ভুক্তভোগীরা ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেইট সংলগ্ন মসজিদের সামনে দাঁড়ালে একজন শিক্ষক এসে উচ্চস্বরে চিৎকার শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘এই মেয়ে এখান থেকে যাও, লজ্জাশরম নেই? মসজিদের সামনে দাঁড়িয়েছ কেন?’
এ সময় সিভিল পোশাকের এক পুলিশ সদস্য ছাত্রীদের গালি দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের পোশাকের ঠিক নেই, নির্লজ্জ। আপনাদের ওড়না ঠিক নেই, বেয়াদব মেয়েমানুষ।’ তখন তাঁরা ওই পুলিশকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি আমার বাবার বয়সী। আপনি কেন আমার ওড়না ও পোশাক নিয়ে কথা বলবেন?’ বাকবিতণ্ডার এমন সময় এক মহিলা সেখানে উপস্থিত হন। তিনি এসেই বলেন, ‘বেয়াদব মেয়ে, এখনও ওড়না দিয়ে শরীর ঢাকেনি?’
ভুক্তভোগীরা আরও উল্লেখ করেন, সেই শিক্ষক তখন নামাজে না গিয়ে তাদের আইডি কার্ড রাখার হুকুম দেন। তাঁরা চলে যেতে চাইলে তাদের ধরে এনে আইডি কার্ড রেখে দিতে বলেন। তখন পুলিশের ওই সদস্য বলেন, ‘আপনাদের স্যার বলেছেন, আইডি কার্ড দেন।’ এরপর মানসম্মানের ভয়ে তাঁরা ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে আসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীরা বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে, পরে বিভাগের কয়েকজন মিলে শুক্রবার রাতে কাজলা গেইটে যান। সেখানে কর্মরত এক পুলিশ সদস্য বিষয়টি স্বীকারও করেন। তাঁরা সেই শিক্ষকের পরিচয় জেনেছেন এবং জানতে পারেন যে, ওই মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের স্ত্রী। এ বিষয়ে আগামীকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল ও প্রক্টর দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।