জেএসসি পরীক্ষায় বসছে সোয়া ২৩ লাখ শিক্ষার্থী

সারাদেশে ১ নভেম্বর (রোববার) থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরু হবে। জাতীয় পরীক্ষার প্রথম দিনে জেএসসির ‘বাংলা প্রথমপত্র’ ও জেডিসির ‘কুরআন মাজীদ ও তাজবিদ’ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হবে।
চলতি বছর জেএসসি ও জেডিসিতে মোট ২৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ছাত্রী ১২ লাখ ৪৩ হাজার ২৬৩ জন ও ছাত্র ১০ লাখ ৮২ হাজার ৬৭০ জন। ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা এক লাখ ৬০ হাজার ৫৯৩ জন বেশি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। এ সময় শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খানসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চলতি বছর সারাদেশের ২৮ হাজার ৬৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ ২৩ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ২ হাজার ৬২৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসবে। গত বছরের চেয়ে এবার কেন্দ্রের সংখ্যা ১০২টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭০৭টি বৃদ্ধি পেয়েছে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, চলতি বছর জেএসসির ১৯ হাজার ৫৪৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৭ জন শিক্ষার্থী এক হাজার ৯০৪টি কেন্দ্রে এবং জেডিসির ৯ হাজার ৮৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪৮৬ জন শিক্ষার্থী ৭২৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিবে। এছাড়া বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অর্থাৎ, সউদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ, লিবিয়ার ত্রিপোলি, কাতারের দোহা, ওমানের সাহাম, আবুধাবি, দুবাই ও বাহরাইনে মোট ৫৮৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর জেএসসি ও জেডিসির অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যথাক্রমে এক লাখ ১৮ হাজার ২১৪ জন ও ১৪ হাজার ৭৭৯ জন। এক, দুই ও তিন বিষয়ে অকৃতকার্য বিশেষ পরীক্ষার্থী জেএসসির এক লাখ ৯ হাজার ৬২০ জন ও জেডিসির ১১ হাজার ৯৫১ জনও পরীক্ষা দিবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবছর জেএসসি ও জেডিসিতে মোট ২০ লাখ ৯০ হাজার ৬৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। গত বছরের তুলনায় এবার দুই লাখ ৩৫ হাজার ২৪১ জন বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
‘২০১০ সাল থেকে শুরু হয়েছে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা। ওই বছর মোট ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৮০২ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছরই শিক্ষার্থীর এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চলতি বছর ২৩ লক্ষাধিকে দাঁড়িয়েছে।’
নাহিদ আরো বলেন, বর্তমান সরকার প্রাথমিক সমাপনী ও জুনিয়র সমাপনী পরীক্ষা চালু করার পর থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে কমে আসছে ঝরে পড়ার হার।
গত ছয় বছর যাবত প্রাথমিক ও জুনিয়র সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে উল্লেখ্য করে মন্ত্রী বলেন, এ দু’টি পরীক্ষা চালু করার পর থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে পরীক্ষা ভীতি কেটে গেছে। এতে শিক্ষার্থীরা এখন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও ভীতিহীন মানসিকতায় দিতে পারছে।
নাহিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা এবার বাংলা দ্বিতীয় এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সকল বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা দিবে। বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) ও সৃজনশীল (সিকিউ) প্রশ্নপত্রে দু’টি বিভাগ থাকলেও দু’টি অংশ নিয়ে একত্রে ৩৩ নম্বর পেলেই পাস বলে গণ্য হবে। বহু নির্বাচনী ও সৃজনশীল একই খাতায় পরীক্ষা হবে। এমসিকিউর বৃত্ত ভরাট করতে হবে না, টিক দিলেই চলবে। এ ছাড়া কোনো পরীক্ষার্থীকেই আলাদাভাবে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে হবে না। এ পরীক্ষার মূল্যায়নেই বৃত্তি প্রদান করা হবে।
শ্রবণ ও অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেয়া হবে। দৃষ্টি ও সেরিব্রাল প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই, তাদের জন্য শ্রুতি লেখকের সুযোগ থাকবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা সম্ভব হবে না।
কোচিং সেন্টারগুলো প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা সরকার ভাবছে। আইনের সংশোধনী আনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা ভাবা হচ্ছে। যেন প্রশ্ন ফাঁসকারীদের দ্রুত অন্তত ২ বছরের শাস্তি প্রদান করা যায়।