মানসিক নির্যাতনে ‘অবসর’, ফের ক্লাসে ফেরার আবেদন ঢাবি শিক্ষকের

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একের পর এক মানসিক নির্যাতন ও হেনস্তার শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু মূসা আরিফ বিল্লাহ। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও বছরের পর বছর পদোন্নতির ফাইল আটকে রেখে একাডেমিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করায় স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন তিনি।
২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় অবসরে যান ড. আবু মূসা আরিফ বিল্লাহ। সবশেষ তিনি চীনের জচ্ছু নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে শিক্ষকতা করেন। তবে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি আবারও ক্লাসরুমে ফিরতে চান। তিনি পড়াতে চান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এ বিষয়ে তিনি চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে আবেদন করেছেন।
ড. আবু মূসা আরিফ বিল্লাহ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার আদি কর্মস্থল। বর্বর আওয়ামী দলদাসদের একের পর এক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে, বিশেষ করে ২৭ বছরের তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়, কিংস কলেজ, ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং এফসিও ও সোয়াসে শিক্ষকতা ও গবেষণা অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তাঁবেদার ভিসিরা আমাকে অধ্যাপক হতে দেননি। অথচ আমার বেশ কয়েকজন ছাত্র ৮ থেকে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেই অধ্যাপক হয়েছে।
ড. আরিফ বিল্লাহ তাঁর আবেদনে লিখেছেন, আমার পিএইচডি ডিগ্রি চলাকালীন ব্রিটেনের নামকরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। দেশের প্রতি ভালোবাসা, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করে আমার ছেলে-মেয়েদের আপত্তি সত্ত্বেও ওই পেনশন স্কিম ভেঙে বাংলাদেশে আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মান-সম্মান রক্ষার কথা চিন্তা করে ১০ বছর চাকরির বয়স থাকা সত্ত্বেও অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হই।
ড. আরিফ বিল্লাহ ন্যায়বিচার চেয়ে বলেন, ডিসেম্বর মাসে জেনেছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন বৈষম্যবিরোধী একটি কমিটি গঠন করেছে। আশা করি আমি ন্যায়বিচার পাব। শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য আমি মুখিয়ে আছি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, আমরা আবেদনটি পেয়েছি। যারা নির্যাতন-অবিচারের শিকার হয়েছেন, তাদের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। আশা করি দ্রুত একটি সমাধান হবে।