ঈদবাজার
ক্রেতাদের পছন্দ বসুন্ধরা সিটি

দেশের অন্যতম শপিং মলের মধ্যে সর্ব প্রথম স্থানটিতে রয়েছে ‘বসুন্ধরা সিটি’। এখন পর্যন্ত জনপ্রিয় যে কয়টি মার্কেট রয়েছে তার মধ্যে পরিপূর্ণ কেনাকাটার সুযোগ যেন এখানেই মিলবে। শুধু ঈদ নয় সারা বছরই যেন জমজমাট থাকে এই মার্কেট। ঈদ এলে তা যেন আরো পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেকোনো পোশাকের লেটেস্ট কালেশনের কথা এলে এই মার্কেটিতে তা আগে আসে। ঈদ বাজারে ক্রেতা-আগ্রহ আর হাল ফ্যাশন বিবেচনায় রেখে প্রতিটি দোকান সেজেছে নতুন সাজে।
বসুন্ধরা সিটির বেজমেন্ট থেকে শুরু করে লেভেল-৭ পর্যন্ত সারি সারি দোকান সাজানো হরেক পণ্যে। পোশাক, শাড়ি, বোরকা, জুতা-স্যান্ডেল, প্রসাধনী, গয়না থেকে শুরু করে ঘর-গৃহস্থালির সামগ্রী, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, বাচ্চাদের খেলনা, শোপিস, টেইলার্স সুবিধা- সবই একসঙ্গে মিলছে এখানে। নামিদামি ব্র্যান্ড থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও আমদানি করা সব ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে দেদার। এমনকি ঈদের দিনের অন্যতম অনুষঙ্গ আতরের জন্যও অন্যত্র ছোটার দরকার নেই।
বর্তমান সময়ে সব চাহিদা মিটিয়ে আসছে এই মলটি। তাই উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের পাশাপাশি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও বেছে নিয়েছে কেনাকাটার অনন্য মাধ্যম হিসেবে। ক্রেতাদের কেনাকাটায় সুবিধার্থে মলের ভেতরেই পাচ্ছেন বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ। অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েচে পুরো মল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বসবার জন্য প্রতিটি ফ্লোরেই জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বিনোদন এবং সুন্দর পরিবেশে মজাদার দেশি-বিদেশি খাবারের বিশাল আয়োজন। একসঙ্গে সব সুবিধা থাকায় রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র পান্থপথে এই শপিং মলে বরাবরের মতো এবারও ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতার ভিড়টা বেশি।
বসুন্ধরার লেভেল ১-এ রয়েছে হরেক ডিজাইন আর রং-বেরঙের পোশাকের বিশাল সমারোহ। আছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঘড়ির দোকানও। বাচ্চাদের পোশাকের দোকানে বিক্রি বেশি। ভারতের জর্জেট, নেট, মসলিনের পোশাক, টপস, ফ্রক, কুন্দন, জরি ও পুঁতির কাজ করা জমকালো লং ফ্রকের চাহিদা বেশি। এসবের দাম ৭০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা বা এর বেশি। ছেলে শিশুদের শার্ট-প্যান্ট ও গেঞ্জি-প্যান্টের সেট বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। এই লেভেলে নামকরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনীর অনেক দোকান রয়েছে। এ ছাড়া চুড়ি, ক্লিপ, ইমিটেশনের গয়না, ঘর সাজানোর জিনিসও ভালো বিক্রি হচ্ছে। অনেক দোকানেই পণ্য বিক্রি হচ্ছে এক দামে। আবার দরদাম করে কেনার সুযোগও আছে। একই জাতীয় পণ্যের অনেক দোকান পাশাপাশি থাকায় ক্রেতারা দোকান থেকে দোকানে ঘুরে যাচাই করে কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। বিশেষত শাড়ি, বাচ্চাদের পোশাক, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, ছেলেদের পোশাকের দোকানে ক্রেতা বেশি।
লেভেল-২, ৩ ও ৪ নম্বরে রয়েছে বিভিন্ন পোশাক, জুতা ও ইমিটেশনের গয়নাসহ অন্যান্য সামগ্রী। ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সালোয়ার-কামিজ ও লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে এসব দোকানে। দাম পাঁচ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আমদানি করা শাড়ির দামও এমন। তবে ৫০০ থেকে ৫০০ টাকা দামের শাড়ি কেনারও সুবিধা রয়েছে বসুন্ধরা সিটিতে। লেভেল ৩-এ ছেলেদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক বেশি। এই লেভেলে সেলাই ছাড়া মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ বিক্রি হচ্ছে। লেভেল ৪-এ রয়েছে রকমারি বোরকার দোকান। সৌদি, দুবাইসহ বিদেশি বাহারি সব বোরকা মিলছে। দাম এক হাজার থেকে চার-পাঁচ হাজার টাকা। এর সঙ্গে মিলিয়ে স্কার্ফ, ওড়নাও কিনছেন অনেকে।
অনেকে পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল কিনে গয়নাও দেখছেন লেভেল ৫-এ। এই লেভেলে সোনা, রূপা ও মুক্তার গয়নার দোকান বেশি। সীমিত পরিসরে বিভিন্ন ডিজাইনের জুতাও বিক্রি হচ্ছে। লেভেল ৬-এ পাদুকার দোকান বেশি। তৈরি পোশাকও বিক্রি হচ্ছে বেশ।
লেভেল ৭-এ রয়েছে ইনফিনিটি, অ্যাপেক্স, বাটা, ফাইভ এস, দেশী দশের মতো নামিদামি ব্র্যান্ডের দোকান। অন্য অনেক লেভেলের চেয়ে এখানে ক্রেতার সংখ্যা বেশি। এখানে উন্নত মানের জুতা-স্যান্ডেল ৭০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা বা এরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
দেশি ফ্যাশন হাউস রং, সাদা-কালো, অঞ্জন’সসহ বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ড নিয়ে গড়ে উঠেছে দেশী দশ। দেশী দশে সালোয়ার-কামিজের দাম এক হাজার ২০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা। শাড়ি এক হাজার ২০০ থেকে আট হাজার টাকা বা তার বেশি। এখানে আলাদাভাবে কামিজ, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না পাওয়া যাচ্ছে। সব বয়সীদের জন্য রয়েছে শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা। বাচ্চাদের জন্যও রয়েছে রকমারি পোশাক। দামও সহনীয়। নানা ডিজাইনের গয়না এবং ঘর সাজানোর সামগ্রীও বিক্রি হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরে গেলে মোস্তফা মার্টে কেনাকাটা করেন অনেকেই। সিঙ্গাপুরের নামিদামি চেইন শপ মোস্তফা মার্টের সুপরিসর দোকান রয়েছে বসুন্ধরা শপিং মলের বিশাল দুটি বেজমেন্টজুড়ে। থরে থরে সাজানো রয়েছে আমদানি করা পোশাক, রান্নাঘর ও গৃহসজ্জার উপকরণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ নিত্যব্যবহার্য হরেক পণ্য। এখানে হাল ফ্যাশনের প্রায় সব পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে।