রোজার বাজার এখনই

আর কয়েক দিন পরেই শুরু হচ্ছে রমজান মাস। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে রোজার বাজারের তোড়জোড়। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের ফর্দও বানানো হয়ে গেছে নিশ্চয়ই। আপনার রোজার বাজারের হিসাব মেলাতে আমাদের এবারের আয়োজন।
রোজার খাবার-দাবার অন্য সময় থেকে ভিন্ন। কারণ, এ সময় খাওয়ার চক্রটা বদলে যায়, সময় পরিবর্তন হয়, ফলে খাদ্যাভ্যাসেও কিছুটা পরিবর্তন আসে।
রোজায় ইফতারিতে প্রাধান্য পায় পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা-বুট, মুড়ি এ ধরনের খাবার। তাই আগে আপনি এ ধরনের খাবারের একটি তালিকা করে ফেলুন। যেমন : এই মাসে চাল-ডাল, ছোলা বুট, তেল, লবণ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, গুঁড়া মরিচ, হলুদ, বেসন, ময়দা, খেজুর, মুড়ি, চিড়া, দুধ, শরবত ও চিনি কী পরিমাণ লাগতে পারে, তার হিসাব করে নিন।
কারণ, পুরো মাসের বাজার একসঙ্গে কিনে নিলে আপনার কিছুটা খরচ কমবে। এ ক্ষেত্রে খুব ভালো হয় যদি আপনি পাইকারি দোকানগুলো থেকে কিনে নেন। কারণ, এখানে পাড়ার দোকান থেকে অনেকটাই কম দামে এসব পণ্য পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া এখানে একই পণ্যের অনেক দোকান থাকায় ভালো পণ্যটি সহজেই পেয়ে যাবেন হাতের কাছে।
প্রতিবছরই রোজার সময় ছোলা, আলু, বেগুন, কাঁচামরিচ, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, রসুনের দাম বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এরই মধ্যে বেড়ে গেছে অনেক পণ্যের দাম। সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে রসুন, ব্রয়লার মুরগি, চিনি, ছোলা ও পেঁয়াজ।
কাঁচা সবজির দামও কিছুটা বাড়তি। রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে তারই প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রতিটি বাজারেই সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে পেঁয়াজ-রসুনের সঙ্গে প্রায় সব ধরনের শাকসবজির দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে দাম বাড়ার পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।
রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী, দয়াগঞ্জ, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, মতিঝিল, কমলাপুর, খিলগাঁও, শান্তিবাগ ও মালিবাগের কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আমদানি করা মোটা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৯০ টাকায়।
আর এক কোয়ার রসুন ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়, ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। প্রতি কেজি গোলআলু ২০ থেকে ২৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ৯০ থেকে ১১০ টাকা ও এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯২ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৪২০- ৪৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি খোলা বাদাম ১০০-১৮০ টাকা এবং প্রতি কেজি কিশমিশের মূল্য ৪০০-৫০০ টাকা। প্রতি কেজি শুকনা মরিচ ১৫০- ২২০ টাকা, গুঁড়ামরিচ ২০০-২৫০ টাকা, জিরা ৩৮০-৪২০ টাকা ও প্রতি কেজি আদা ৬০- ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মিনিকেট চাল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৪৪ থেকে ৫২ টাকা। আটা প্রতি দুই কেজি প্যাকেটের দাম ৬০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেটের ময়দার মূল্য ৭০-৮০ টাকা। পাইকারিতে প্রতি কেজি ছোলা ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়, খুচরা বাজারে ৯০ টাকা।
দেশি মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ১০৫-১৪০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ান মসুর ডাল ১১০-১৪০ টাকা, ছোলা বুট ১০০-১১০ টাকা, মুগ ডাল ১১০-১১৫ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ টাকা, বুট ডাল ১০০-১০৫ টাকা।
প্রতি কেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে (বুট) ১৫০, অ্যাংকর ৭০-৮০ টাকা। বিআর-২৮ চালের মুড়ি ৫০-৬০, বিআর-২৯ চালের মুড়ি ৫০-৫৮, গুঠি স্বর্ণা চালের মুড়ি ৫২-৫৫ টাকা ও বিআর-১৬ চালের মুড়ি ৫৫-৫৮ টাকা, বরিশালের মোটা চালের মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে।
এ ছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০-১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিড়া ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই পরিমাণ ভাজা চিড়া এলাকাভেদে ৬৫-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন মুরগির ডিম ৯০-১০০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ১১০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রায় সাত-আট ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। মানভেদে প্রতি কেজির দাম পড়বে ১৩০-১০০০ টাকার মধ্যে। পাইকারি দোকানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়, আর খুচরা দোকানে ৫৮ টাকা, প্রতি কেজি গুড় ৭০ টাকা।
মানভেদে লবণ ৩০-৩৫ টাকা, প্যাকেটজাত সাধারণ আয়োডিন লবণ ২৩-৩০ টাকা ও সাধারণ খোলা লবণ ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের লাল মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়।
এ ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৪০-৪৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি পাকা টমেটো ৪৫ টাকা, বরবটি ৪০, ঝিঙা ৪০, করলা ৩০ ও বেগুন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লেবু ১৫-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।