৯৫ বছর বয়সী এক অফলাইন নারীর গল্প

৯৫ বছরের গেয়ার্ডা হামেল এখনো কাউন্টারের পেছনে দাঁড়ান। অনলাইন খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তার ‘স্টকিং ড্রয়ার’ মোজার দোকান ধরে রেখেছেন তিনি। তার জীবন সাহস এবং দৃঢ় সংকল্পে ভরা।
গেয়ার্ডা হামেলের বয়স ৯৫ বছর। তিনি একজন ব্যবসায়ী। এখনও অবসরের কথা ভাবছেন না উল্লেখ করে হামেল বলেন, ‘আমার শব্দভাণ্ডারে অসম্ভব বলে কিছু নেই। কোনো না কোনো পথ থাকেই। অবশ্যই এমন দিনও থাকে, যখন আমার বিছানায় থাকতে ভালো লাগে। কিন্তু আমার দোকান সবসময় আমাকে ডাকে।’
ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে বাড ন্যয়েহাইমে তার দোকান ‘স্টকিং ড্রয়ার’ অবস্থিত। এটির খরচ সাধ্যের মধ্যে।
স্পা শহরটির বাসিন্দা ৩০ হাজারের মতো। তবে স্বাস্থ্যগত কারণে এবং বিনোদনের জন্য হাজার হাজার পর্যটক প্রতি বছর শহরটি ভ্রমণ করেন। গেয়ার্ডা হামেল সপ্তাহে ছয়দিন তার দোকান খোলা রাখেন। অনলাইনে বেচাকেনায় তিনি একদমই আগ্রহী নন।
গেয়ার্ডা হামেল বলেন, ‘আমার ইন্টারনেট নেই। আমি ইন্টারনেটে কিছু বিক্রি করি না। আমার ক্রেতারা আমার কাছে আসেন এবং প্রয়োজনমতো কেনাকাটা করেন। তারা যা খুঁজছেন দিতে পারলে আমার ভালো লাগে। এটা সব সময় সহজ নয়।’
যদিও অনলাইনে খুচরা বিক্রি না করায় বিক্রিবাট্টা কমে যাচ্ছে তারপরও তিনি অনলাইন জগতে যেতে রাজি নন। এর কারণ কী? তিনি বলেন, ‘ক্রেতারা দোকানে আসেন। একটি সংযোগ তৈরি হয়। এটা চমৎকার ব্যাপার।’
আলাপ, কৃতজ্ঞ ক্রেতা, আর অর্থবহ জীবন- তার চলার পথের পাথেয়। তিনি ঘরে একা থাকতে চান না। তিনি মনে করেন অনলাইন বেচাকেনার কারণে তার শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
গেয়ার্ডা হামেল বলেন, ‘আমি যখন আর দোকানটা চালাতে পারবো না, তখন বন্ধ করে দেবো। তারপর এই স্থানটি পরিষ্কার করে ফেলা হবে। আরেকটি দোকান খালি হবে। আর এর বিরুদ্ধেই আমি লড়ে যাচ্ছি।’
তার জীবন কখনোই সহজ ছিল না৷ তিনি গত শতকের পঞ্চাশের দশকে পূর্ব জার্মানি থেকে পালিয়ে আসেন এবং দুই সন্তানকে একাই বড় করেন। ২২ বছর বয়সে একটি সন্তান মারা যায়।
খুচরা বিক্রেতা গেয়ার্ডা হামেল বলেন,‘আপনি যখন উদ্বেগ এবং ঝামেলার মধ্যে থাকেন, তখন অ্যালকোহল সহায়তা করে না। কাজ সহায়তা করে।’ ভালো খাবার কি বৃদ্ধকালে সুস্থ থাকার আরেক রহস্য?
তিনি বলেন, ‘‘এটা কি ঈশ্বরের উপহার হতে পারে? হয়ত সেটাই।’ তিনি আশা করছেন আরো অনেকদিন এভাবেই কাটবে তার।