সাত খুনের বিচার শুরু
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/02/08/photo-1454926413.jpg)
নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার বিচার শুরু হয়েছে। এ মামলার পলাতক ১২ আসামিসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রাখা হয়েছে।
সাত খুন মামলার প্রধান আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১১-এর সাবেক তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কমান্ডার এম এম মাসুদ রানা, মেজর আরিফসহ ২৩ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে ১৩ আসামির পক্ষে অব্যাহতি চেয়ে কয়েকজন আইনজীবী বক্তব্য দেন। আদালত তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের কাছ থেকে পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করেন র্যাবের কতিপয় সদস্য। এর তিনদিন পর সাতজনেরই মৃতদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়।
ঘটনায় ফতুল্লা থানায় দুটি মামলা হয়। এর একটির বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পাল, অপর মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।
অভিযোগ গঠনের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী আশরাফ উজ্জামান জানান, তিনি পাঁচজন আসামির পক্ষে আদালতে শুনানি করেছেন। তাঁদের পক্ষে আদালতে দুটি আবেদন করা হয়। এতে বলা হয়, যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বিশেষ করে মেজর আরিফের স্বীকারোক্তিতে স্পষ্ট, তারেক সাঈদের নির্দেশে ও তত্ত্বাবধানে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তারপর সন্দেহবশত বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু নির্দোষ মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। জোর করে তাঁর আসামিদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এ মামলার অভিযোগপত্রকে অসত্য দাবি করে আরো বলেন, এ মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন।
এদিকে বাদী এবং তাঁর আইনজীবী শঙ্কা প্রকাশ করে সাক্ষীদের নিরাপদে নির্বিঘ্নে সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।urgentPhoto
মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আসামিরা খুবই প্রভাবশালী। সাক্ষীরা যাতে আদালতে এসে নির্বিঘ্নে সাক্ষ্য দিতে পারে সে জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি এ মামলার ন্যায়বিচার চাই।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘সাক্ষীরা যাতে নির্বিঘ্নে এসে আদালতে সাক্ষ্য দিতে পারে সরকার সেই ব্যবস্থা নেবে বলেই আমি আশা করি।’
সরকারি আইনজীবী (পিপি) এম ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, ৩৫ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১, ১০৯ এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১২০-এর (খ), ৩৪ ধারায় এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
এর আগে কাশিমপুর ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, কমান্ডার এম এম রানা, মেজর আরিফসহ অন্য আসামিদের সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। এ সময় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় আদালত চত্বরে।