এরশাদ ট্রাস্টের সম্পত্তি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/01/22/ershaad-ttraastt.jpg)
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এরশাদ পুত্র এরিকের খরচ বাবদ প্রতিমাসে বনানীস্থ কুয়েত মৈত্রী মার্কেটে একটি দোকান, গুলশান ও বনানীতে দুটি ফ্লাট থেকে প্রাপ্ত ভাড়া প্রায় তিন লাখ বিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক এরিক এরশাদের ভরণ-পোষণের উসিলা দিয়ে প্রতি মাসে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে আসছেন আমাদের কাছে। বিদিশা সিদ্দিক এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছে এরিক এরশাদকে। ইতোপূর্বে এরিকের বন্দিদশার একটি অডিও বার্তা ও লিখিতপত্র আমরা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছি।
কাজী মামুনুর রশীদ আরও বলেন, এরশাদ তার গঠিত ট্রাস্টের সম্পদে সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিককে কোন অধিকার দেননি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর বিদিশা সিদ্দিক আইনি জটিলতার কারণে ট্রাস্টি বোর্ডকে কজ্বায় নিতে না পারলেও এর অধিকাংশ সম্পদ বর্তমানে সে দখলে রেখেছে।
মামুন জানান, ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল সম্পাদিত এক দলিলে ট্রাস্ট গঠন করে তার বিষয়-সম্পত্তির বড় অংশ সেখানে দান করেন এরশাদ। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশে বলা হয়েছে, ছেলে শাহাতা জারাব এরিকের ভরণ-পোষণ ও জনহিতকর কাজে ব্যয় হবে সম্পত্তি থেকে অর্জিত আয়। ট্রাস্টের আয় ভোগ ও কর্মকাণ্ডে অংশীদার হতে পারবেন না বিদিশা। তিনি এমন দাবি করলে তা আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হবে না। কিন্তু এরশাদের মৃত্যুর চারমাস পরই পুত্র এরিককে খাওয়ানোর কথা বলে বারিধারা প্রেসিডেন্ট পার্কে ঢুকেন এরশাদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। ট্রাস্টের অসিয়ত না মেনেই নিকেতনে তার নিজস্ব ফ্লাট থাকলেও তিনি আর প্রেসিডেন্ট পার্ক থেকে বের হননি। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রেসিডেন্ট পার্কের পুরোনো সকল কর্মচারীদের বিদায় করে দেন বিদিশা সিদ্দিক।
কাজী মামুনুর রশীদ অভিযোগ করে বলেন, এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে দেখভালের নাম করে ট্রাস্টকৃত সম্পদে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক বসবাস করছেন। এরপর থেকেই প্রেসিডেন্ট পার্কে শুরু হয়েছে অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সমাজের উঁচুতলার এক শ্রেণীর ক্ষমতালোভী ব্যক্তিদের নিয়ে বিদিশা খুলে বসেন মদের জলসা। প্রেসিডেন্ট পার্কে প্রতি রাতেই চলে অনৈতিক ও অসামজিক কর্মকাণ্ড। কখনও কখনও এসব অপকর্মে জোরপূর্বক এরশাদপুত্র এরিককেও জড়ানোর চেষ্টা করা হয়। এইসব আড্ডার ভিডিও ধারণ ও প্রকাশ করেন বিদিশা সিদ্দিক। ভিডিও ধারণের উদ্দেশ্য হচ্ছে তার অপকর্মে জড়িয়ে যাওয়া মানুষগুলো যেন কখনো তার বিপক্ষে অবস্থান না নিতে পারেন। এসব ভিডিও দেখিয়ে তাদের ব্লাকমেইল করে থাকেন বিদিশা সিদ্দিক। কেউ তার কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করলে তাকে এসব ভিডিও দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও সদস্য মনিরুজ্জামান টিটু উপস্থিত ছিলেন।