সরস্বতী পূজা দেখে বাড়ি ফেরা হলো না তিন বন্ধুর
ফেনীতে সরস্বতী পূজা দেখে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে দাগনভূঞা উপজেলার বেকের বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই নোয়াখালীর বাসিন্দা। পূজা দেখার জন্য তারা ফেনী এসেছিলেন।
নিহতরা হলেন নোয়াখালীর বসুরহাট জুগিদিয়া গ্রামের কৃষ্ণ ঘোষের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী অন্তর ঘোষ (১৮), বেগমগঞ্জ থানার আলিপুর গ্রামের কৃষ্ণগোপালের ছেলে সৌরভ (২৩) ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বিরহিমপুর গ্রামের মনোরঞ্জন বৈষ্ণবের ছেলে দেবু বৈষ্ণব (২১)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে নিহত তিনজন একটি মোটরসাইকেলযোগে ফেনী থেকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেকেরবাজার সংলগ্ন আশ্রাফপুর এলাকায় পৌঁছালে সড়কের পাশে থাকা স’মিলের গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে পড়ে গেলে দুজনের ওপর দিয়ে একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে সৌরভ ও দেবুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় অন্যজনকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভাড়া নিয়ে ফেনী থেকে দাগনভূঞা যাচ্ছিলাম। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তিনজন রাস্তায় পড়েছিল। ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান। এদের মধ্যে সৌরভ নামে একজন তখনও জীবিত ছিলেন। পরে তাকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সিএনজি করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত অন্তর ঘোষের খালা (মাসি) প্রিয়াঙ্কা ঘোষ বলেন, তারা তিন বন্ধু পূজা দেখতে নোয়াখালী থেকে ফেনীতে এসেছিল। পূজা দেখে বাড়ি ফেরার পথে দাগনভূঞায় দুর্ঘটনায় তারা মারা যায়। আমার বোনের একমাত্র ছেলের (অন্তর) এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না৷
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. সুজন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার (সৌরভ) মৃত্যু হয়েছে। জরুরি বিভাগে আনার পর তাকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশীদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। অন্য একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।