কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/07/19/photo-1468923789.jpg)
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে এসব এলাকায় দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজীবপুর ও সদর উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। বন্যার্ত এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পানিতে ডুবে গেছে পাট, সবজি, কলাসহ আমন বীজতলা। এসব এলাকার বেশির ভাগ নলকূপ পানিতে তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। অন্যদিকে চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়লেও নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপচরের বাসিন্দারা এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা পায়নি।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বলদিয়া গ্রামের মফিজন বেওয়া জানান, তাঁর বাড়ির চারদিকে পানি উঠেছে। ঘরের ভেতরেও ঢুকে যাচ্ছে পানি। ছেলমেয়ে আর গরু-ছাগল নিয়ে ভীষণ বিপদে আছেন তিনি। গত বন্যায় কোনো সাহায্য পাননি জানিয়ে মফিজন বেওয়া বলেন, এবারো কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ওসমান আলী জানান, নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে মনে হয় আর বাড়িতে থাকা সম্ভব হবে না। পরিবারের সদস্য এবং পোষা পশু নিয়ে উঁচু কোনো জায়গায় যেতে হবে।
এ ব্যাপারে যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো যাত্রাপুর ইউনিয়নের প্রায় ৯টি ওয়ার্ডই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে গত বন্যার চেয়ে আরো বড় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য সরকারি বা বেসরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখার একটি সূত্র জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একশ মেট্রিক টন চাল ও চার লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে তা বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার, দুধকুমোরের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে তীরবর্তী এলাকাগুলো তলিয়ে যাচ্ছে।