২৮০০ কোটি টাকায় জামিন মিলবে ডেসটিনির কর্তাদের
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/11/13/photo-1479022182.jpg)
দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা জমা দিলে তবেই অর্থ পাচারের মামলায় জামিন মিলবে মাল্টি লেবেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের।
এই শর্তেই আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার শুনানি শেষে শর্তসাপেক্ষ জামিনের এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আজমালুল হোসেন কিউসি। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
আদেশে আদালত বলেন, আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে ডেসটিনি গ্রুপের বৃক্ষরোপণ প্রকল্পের গাছ বিক্রি করে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে হবে ওই দুজনকে। অন্যথায় জামিন অকার্যকর হয়ে যাবে। তবে এ সময়ের মধ্যে নগদ দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করলেও তাঁরা জামিন পাবেন।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আদালতে আজ দুই আসামির পক্ষ থেকে একটি হলফনামা দাখিল করা হয়েছে। এতে বলা হয়, তাদের কাছে ৩৫ লাখ গাছ আছে। প্রতিটি গাছ আট হাজার টাকা করে বিক্রি করে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে পারবেন তাঁরা। এরপর আদালত ছয় সপ্তাহের মধ্যে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা পরিশোধের শর্তে তাঁদের জামিন দিয়েছেন। তবে নগদ দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করলেও জামিন মিলবে বলে আদেশে বলা হয়।
ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যানটেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সংসদ সদস্য ড. শামসুল হক ভূঁইয়ার তত্ত্বাবধানে তাঁরা টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যদি গাছ বিক্রি করে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে না পারেন, তাহলে নগদ দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেবেন তাঁরা। এর অনুলিপি দুদকের চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠাতে হবে। এরপর যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যাচাই করে তাদের কাছে টাকা হস্তান্তরের পর জামিনে মুক্তি পাবেন দুই কর্মকর্তা।
দুর্নীতির মামলায় গত ২০ জুলাই হাইকোর্ট ডেসটিনির এমডি ও চেয়ারম্যানকে জামিন দেন। পরে দুদকের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিন আদেশ স্থগিত করেন। একইসঙ্গে শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ডেসটিনি (এমএলএম) ও ট্রি-প্ল্যানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে তিন হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাজধানীর কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। এই দুটি মামলায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন কারাগারে রয়েছেন।