কুড়িগ্রামে দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/07/07/photo-1499430987.jpg)
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপচরের দেড় শতাধিক গ্রাম।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চিলমারী, উলিপুর ও সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। এসব এলাকার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষজন নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় যাতায়াত করছে। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট। চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার মানুষজন।
উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের খেয়ারচর গ্রামের নজিবুল হক বলেন, ‘বন্যার পানি বাড়িতে প্রবেশ করায় পানিবন্দি অবস্থায় আছি। পানি আরো বাড়ছে। এ অবস্থায় পানি বাড়তে থাকলে বউ-বাচ্চা নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হবে।’
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর বাজার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র তীরের হাজেরা বেগম জানান, নদীর তীরে তাঁদের বাড়ি। উঁচু জায়গায় বাড়ি করলেও বন্যার পানি বাড়িতে উঠতে শুরু করেছে। পানি আরো বাড়লে কোথায় যাব জানেন না।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন জানান, ‘আমার ইউনিয়নের নয়াডারা, অনন্তপুর, বাবুরচর, চরগুজিমারী ও চর দাগারকুটিসহ ১০ গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’
চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী বীর বিক্রম জানান, চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর, নয়ারহাট ও চিলমারী ইউনিয়নের মানুষ সম্পূর্ণ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আর রানীগঞ্জ, রমনা ও থানাহাট ইউনিয়নের ৬০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ত্রাণতৎপরতা শুরু হয়নি।
এদিকে, সদর উপজেলার কাচিচর ও পিপুলবাড়ী, ঝুনকারচর কমিউনিটি ক্লিনিকের চারিদিকে পানি ওঠায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, জেলার চরাঞ্চলের ৩৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে বন্যার পানি উঠলেও চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ছয় সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।