বান্দরবানে কঠিন চীবর দান উৎসব সম্পন্ন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/11/04/photo-1509781446.jpg)
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং দেওয়ার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে কঠিন চীবর দান উৎসব সম্পন্ন হয়েছে।
উৎসবের শেষ দিনে আজ শনিবার সকালে বান্দরবানে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে দুই শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু সারিবদ্ধভাবে পিণ্ড গ্রহণে বের হন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা মধ্যমপাড়া-উজানীপাড়া ঘুরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষদের কাছ থেকে ছোয়াইং ও পিণ্ড দানের অর্থ গ্রহণ করেন। দীর্ঘ দুই কিলোমিটার পথ পর্যন্ত পাহাড়ি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা রাস্তার এক পাশে প্যান্ডেল টাঙিয়ে সারিবদ্ধভাবে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং, চাল, নগদ টাকা, চীবর, মোমবাতিসহ উৎসবের নানা সামগ্রী দান করেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা
এ বিষয়ে কয়েকজন বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা জানান, তিন মাস বর্ষাবাসের (উপুস) পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা কঠিন চীবর দান উৎসব পালন করে। এই উৎসবে পাহাড়িরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চর্কার মাধ্যমে সুতা তৈরি করে ধর্মীয় গুরু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য চীবর কাপড় বুনে দান করেন। কোনো ধরনের সেলাই ছাড়া তৈরিকৃত চীবর (কাপড়) ক্যায়াংয়ে (বৌদ্ধ বিহার) ভিক্ষুদের বিতরণ করা হয়।
জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের মহা পুণ্যবতী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রত পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। সেই থেকে প্রতি বছর বান্দরবানে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন বিহারে ব্যাপক আয়োজনে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব পালন করে আসছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং বলেন, ‘তিন মাস প্রার্থনার পর আত্মার শান্তির জন্য পাহাড়ের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ শিশু-কিশোররা ধর্মীয় গুরু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ড দান করে পুণ্যের আশায়, পরিশুদ্ধি লাভের আশায়। ধর্ম মানুষকে শুধু পরিশুদ্ধি নয়, ন্যায় এবং সত্য পথে চলার দিক নির্দেশনা দেয়।’