ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন নাকচ
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামিন দেননি আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ এ আদেশ দেন।
ব্যারিস্টার মইনুলের আইনজীবী মনিরুজ্জামান হাওলাদার জানান, আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক শুনানি শেষে তা নাকচ করেন।
এর আগে গত ১ নভেম্বর গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল ইসলাম ডিজিটাল আইনে করা মামলায় ব্যারিস্টার মইনুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে সিএমএম আদালতের বিচারক ব্যারিস্টার মইনুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান।
গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামশ জগলুল হোসেনের আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা করেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি। ওই দিন বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
নথি থেকে জানা যায়, বাদী বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় তিনি কাজ করেন। গত ১৬ অক্টোবর ৭১ টেলিভিশনের টক শো তিনি দেখছিলেন। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী মইনুল তাঁকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।
এ ঘটনায় নারী জাতির সম্মানহানি হয়েছে। অথচ ব্যারিস্টার মইনুল ক্ষমা চাননি।
বরং গত ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টা থেকে ২২ অক্টোবর রাত ৯টার মধ্যে পুনরায় একটি টেলিফোন অডিও রেকর্ড ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করেন মইনুল।
মামলার নথিতে আরো বলা হয়, মইনুল হোসেন ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকার প্যাডে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কিত বিতর্কিত ব্যাখ্যার আড়ালে পুনরায় ফেসবুকে মাসুদা ভাট্টির ব্যক্তিগত চরিত্র জঘন্য বলে মন্তব্য করেছেন।
এদিকে গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন অশালীন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন, তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’
মইনুলের এ ধরনের বাক্য ব্যবহারে সমালোচনা শুরুর পর তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
গত ২২ অক্টোবর এ ঘটনায় রংপুরে দায়ের করা মানহানির মামলায় মইনুলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাঁকে পরে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল তাঁকে রংপুরের আদালতে হাজির করে জামিনের আবেদন করলে জামিন নাকচ করেন রংপুরের আদালত। তিনি বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।