ব্যারিস্টার মইনুলকে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/11/11/photo-1541955468.jpg)
কারাবন্দি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এ আদেশ দেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রহীন বলার ঘটনায় গত ২৪ অক্টোবর ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি।
ওইদিন বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। পরে গত ১ নভেম্বর গুলশান থানা মামলাটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে এবং কারাবন্দি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুলকে গ্রেপ্তার দেখান আদালত। এরপর ৫ নভেম্বর ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
নথিতে বলা হয়েছে, বাদী সুমনা আক্তার লিলি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় তিনি কাজ করেন। গত ১৬ অক্টোবর ৭১ টেলিভিশনের টকশো তিনি দেখছিলেন। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী মইনুল তাঁকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় নারী জাতির সম্মানহানি হয়েছে। অথচ ব্যারিস্টার মইনুল ক্ষমা চাননি।
বরং ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টা থেকে ২২ অক্টোবর রাত ৯টার মধ্যে পুনরায় একটি টেলিফোন অডিও রেকর্ড ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
মামলার নথিতে আরো বলা হয়, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকার প্যাডে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কিত বিতর্কিত ব্যাখ্যার আড়ালে আবারও ফেসবুকে মাসুদা ভাট্টির ব্যক্তিগত চরিত্র জঘন্য বলে মন্তব্য করেন।
পরে ২৪ অক্টোবর ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামশ জগলুল হোসেনের আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা করেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি। ওই দিন বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশন চ্যানেলের একটি টক শোতে আলোচনার একপর্যায়ে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’বলে মন্তব্য করেন মইনুল হোসেন। তাঁর এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২০টি মানহানির মামলা এবং অপর দুটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর রংপুরে দায়ের করা মানহানির মামলায় মইনুলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাঁকে পরে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল শনিবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে রংপুর কারাগার থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
সর্বশেষ আজ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে রংপুর কারাগার থেকে ঢাকায় এনে কেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।